রোজা যেভাবে ইসলামের ফরজ ইবাদত হয়ে উঠল

Date: 2024-03-12
news-banner
মুসলিম উম্মাহর জন্য পবিত্র রমজান মাস জুড়ে রোজা ফালন ফরজ করেছেন আল্লাহ তাআলা। রোজা শুধু ইসলামের অনুসারি উম্মাতে মুহাম্মাদির ওপরই ফরজ হয়নি বরং পৃথিবীর শুরু থেকেই এ রোজার প্রচলন ছিল। অনেক নবী-রাসুলের ওপর তা ছিল ফরজ।

পবিত্র কুরআনে যে আয়াত দ্বারা উম্মাতে মুহাম্মাদির জন্য রোজাকে ফরজ করা হয়েছে, সে আয়াতেই আল্লাহ তাআলা পূর্ববর্তীদের ওপর রোজা ফরজ হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম বা রোজা ফরজ করা হয়েছে; যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল; যাতে তোমরা তাকওয়া (আত্মশুদ্ধি) অর্জনে করতে পার। (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)

এই আয়াত ধারা বুঝা যায় যে, আল্লাহ তাআলা সব যুগের নবী-রাসুলদের জন্য রোজা রাখাকে আবশ্যক করে দিয়েছিলেন। 

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে মাঝে মাঝে রোজা রাখলেও শুরুর দিকে উম্মত বা সাহাবীদের জন্য জন্য ৩০ রোজা রাখার বিষয়টি বাধ্যতামূলক ছিল না। ইসলামে রোজা ফরজ হিসাবে বাধ্যতামূলক করা হয় হিজরি দ্বিতীয় সনে। এরপর থেকেই অপরিবর্তিত রূপে সারা পৃথিবীতে রোজা পালন করা হচ্ছে। ইসলামের প্রধান পাঁচটি ধর্মীয় স্তম্ভের একটি হচ্ছে রোজা। অন্য চারটি ফরজ হচ্ছে ঈমান, নামাজ, যাকাত, হজ্জ।

ইসলামে যে বছর রোজা ফরজ করা হয়েছিল, তার দুই বছর আগে ৬২২ খৃষ্টাব্দে মক্কা থেকে সাহাবীদের নিয়ে মদিনায় হিজরত করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। হিজরতের তারিখ থেকে মুসলিমদের হিজরি সাল গণনা শুরু করা হয়। হিজরি দ্বিতীয় বছরে রমজান মাসে রোজা রাখা বাধ্যতামূলক বা ফরজ ঘোষণা করে আয়াত নাজিল হয়। রোজার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করেও মিথ্যা কথা বলা, পরনিন্দা ও অন্যান্য পাপাচার থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারলো না; তার পানাহার পরিত্যাগ করা আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই।’ (বুখারি)

এ কারণে পূর্ববর্তী যুগের সব নবী-রাসুলদের সময়ও এ কথার ঘোষণা ছিল যে, তোমরা যখন রোযা রাখবে তখন লোক দেখানো মনোবৃত্তি নিয়ে মানুষের মত নিজেদের মুখমন্ডলকে উদাস করে রাখবে না। কেননা, এই শ্রেণির মানুষ নিজেদের মুখমন্ডলের আসল রূপ বিকৃত করে রোজাদারের ভাগ গ্রহণ করতো। যাতে মানুষ মনে করে যে তারা রোজাদার। প্রাক ইসলামি যুগে আরবাসীরাও রোজা সম্পর্কে ওয়াকিফহাল এবং তা পালনে সক্রিয় ছিল। মক্কার কুরাইশরা জাহেলিয়াতের যুগে ১০ মহররম রোজা রাখতো। এ দিনে পবিত্র কাবায় নতুন কিসওয়া বা গিলাফ পরিধান করাতো। (মুসনাদে আহমদ)

মদিনার ইয়াহুদিরাও পৃথক পৃথকভাবে আশুরার উৎসব ও রোজা পালন করতো। (বুখারি) তাদের রোজা পালনের দিনক্ষণ ছিল তাদের নিজেদের গণনার সপ্তম মাসের ১০মস দিন। প্রিয়নবি মদিনায় হিজরতের পরও ইয়াহুদিরা রোজা পালন করতেন।
image

Leave Your Comments