নানা আয়োজন ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে সংযমের পবিত্র মাস রমজানকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের মুসলমানেরা। তবে এবছর গাজাবাসী সেই সুযোগ পায়নি। ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বেঁচে যাওয়া মানুষ কিংবা মৃতদেহের সন্ধানে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে তাদের অনেককে। এমন বিপর্যয়ের মাঝে প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে ইফতারি-সেহরির।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় এবারের রমজান মাস একেবারেই ভিন্ন রূপে এসেছে। গত সোমবার (১১ মার্চ) রমজানের প্রথম দিন উদ্যাপন করেছে বাসিন্দারা। পানীয় ও খাবার সংকটের পাশাপাশি তাদের নিত্যসঙ্গী এখন বিভিন্ন সংক্রামক রোগ। আর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা চলছে পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে।
রমজানের আগে যুদ্ধবিরতির কথা থাকলেও তা কার্যকর হয়নি। বিবদমান পক্ষের আলোচনা পিছিয়ে গেছে বারবার। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবিক সংস্থা গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করলেও সেখানে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো যাচ্ছে না। ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার কারণে স্থলপথে ত্রাণ প্রবেশ করতে পারছে না তবে অল্পসংখ্যক ত্রাণবাহী জাহাজ গাজার উপকূলে ভিড়তে দেয়া হচ্ছে।
ইউরোপের সাইপ্রাস থেকে গাজা পর্যন্ত একটি সামুদ্রিক করিডর ব্যবহার করে প্রথম ত্রাণবাহী জাহাজ রওনা হয়েছে সেখানে। গতকাল মঙ্গলবার সাইপ্রাসের লারনাকা বন্দর ছেড়ে যায় জাহাজটি। অনেকে জাহাজটিকে আশার প্রতীক হিসেবে দেখছে। তবে একটি মাত্র ত্রাণবাহী জাহাজ গাজার অন্তত ২৩ লাখ মানুষকে দুর্ভিক্ষের কবল থেকে রক্ষা করতে পারবে কি না সেটিই বড় প্রশ্ন।
সশস্ত্র হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে গাজায় অন্তত ২৩ জন মারা গেছে। যাদের অধিকাংশই শিশু। এ বিষয়ে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) প্রধান সিন্ডি ম্যাককেইন গত সোমবার বলেন, ‘আমাদের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। যদি আমরা গাজার উত্তরাঞ্চলে ত্রাণের পরিমাণ দ্রুতগতিতে না বাড়াতে পারি, তবে দুর্ভিক্ষ আসন্ন।’ বিশ্বসংস্থাটির খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণ সরবরাহকারী সংস্থা বলছে, এসব মানবিক সংস্থাকে ত্রাণবাহী গাড়ি নিয়ে উত্তর গাজায় প্রবেশে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।