তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে টানা ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে তিস্তাতীরের ৫ জেলার লাখো মানুষ। ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে আজ সোমবার রংপুরের মহিপুরে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কাল মঙ্গলবার সমাপনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ভারতের সিকিমে জন্ম নেওয়া তিস্তা নদী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে।
এরপর লালমনিরহাট, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে মিশেছে। নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার। বাংলাদেশ অংশে রয়েছে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার।
উজানে ভারতের গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণ করে দেশটি তিস্তার পানি একতরফা ব্যবহার করছে। এতে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ। ফলে বর্ষা শেষ হতেই বাংলাদেশ অংশে তিস্তা মরুভূমিতে পরিণত হয়ে জীববৈচিত্র্যে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। আবার বর্ষাকালে ভারত অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় নদীভাঙন ও বন্যার মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ অংশের রংপুর বিভাগ।
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে দীর্ঘদিন আলোচনা হচ্ছে উভয় দেশের মধ্যে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন সময় নানান কর্মসূচি পালন করেছে। বহু আন্দোলন-সংগ্রাম হলেও সুফল পায়নি তিস্তাপারের মানুষ।
এ কারণে তিস্তাপারের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে তিস্তা নদী খনন করে উভয় তীরে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের। যাতে নদীভাঙন, বন্যা আর খরা থেকে রক্ষা পায় এ জনপদ। তবেই চাষাবাদের আওতায় আসবে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। সেই দাবি পূরণে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা ঘোষণা করলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।