কক্সবাজারের দরিয়ানগর সৈকতের তীরবর্তী বঙ্গোপসাগরে টানা জালে ধরা পড়েছে শতাধিক সাদা জেলিফিস বা (ধলা নুইন্যা)।
রোববার (৬ নভেম্বর) বিকেলে উপকূল থেকে মাত্র ৩০০ মিটারের মধ্যে অন্যান্য মাছের সঙ্গে জেলিফিশগুলো ধরা পড়ে। তবে জেলেরা সেগুলো দরিয়া নগর সৈকতেই ফেলে দেয়। সোমবার সকালে এসব জেলিফিস গর্ত করে পুঁতে ফেলা হয়।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশিদ জানায়, "জেলিফিশ ভেসে আসার খবর পেয়ে বায়োলজিক্যাল ওশানোগ্রাফি বিভাগের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তাঁদের মতে জেলিফিশগুলো লবণেমইডেস রোবাস্টাস (ধলা নুইন্যা বা বর নুইন্যা) ও ক্রেম্বায়োনেলা (বল নুইন্যা) জাতের।
প্রতিষ্ঠানটির বায়োলজিক্যাল ওশানোগ্রাফি বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও জেলিফিশ গবেষক সোমিত্র চৌধুরী বলেন, বিশ্বে প্রায় আড়াই হাজার প্রজাতির জেলিফিশ রয়েছে। ১২ প্রজাতির জেলিফিশ খাওয়ার উপযোগী। এর মধ্যে তিন প্রজাতির জেলিফিশ কক্সবাজার উপকূলে ধরা পড়ে।
আন্তর্জাতিক বাজারে এক কেজি জেলিফিশের দাম ১০ ডলার বা প্রায় এক হাজার ১০০ টাকা জানিয়ে তৌহিদা রশিদ বলেন, "বিশ্বে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার বাজার রয়েছে জেলিফিশের। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জেলিফিশ থেকে সার, কীটনাশক, ওষুধ ও কসমেটিক্সসহ নানা পণ্য তৈরি করা হয়।"
এশিয়ার কিছু অঞ্চলে জেলিফিশ হাড় ও পেশীর ব্যথা কমানোর ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এমনকি জেলিফিশ রপ্তানি করে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর শত কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব বলে জানান তিনি।
বঙ্গোপসাগরে দীর্ঘদিন মাছ ধরা বন্ধ থাকায় কক্সবাজার উপকূলে জেলিফিশের ব্যাপক বংশবৃদ্ধি ঘটেছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কক্সবাজারের সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রধান ড. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, গত বছর আগস্টে মাছ ধরা শুরুর পরও জেলিফিস ধরা পড়েছিল। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে ‘ক্রেম্বায়োনেলাথ বা বল নুইন্যাথ' জাতের এবং গত বছর আগস্ট, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে লবণেমইডস রোবাস্টাস বা ধলা নুইন্যা/বর নুইন্যাথ জাত এবং গত জুলাই–আগস্টজুড়ে জেলেদের জালে ‘গেলাস নুইন্যাথ প্রজাতির জেলিফিশ ধরা পড়ে।