পুরো এশিয়া কাপে দুর্দান্ত খেলেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। তুলির শেষ আঁচড় দিল ফাইনালে। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ রোববার (১৭ ডিসেম্বর) সংযুক্ত আরব আমিরাতের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ব্যাটে-বলে অসাধারণ প্রদর্শনীতে বাংলার যুবারা তুলে নেয় ১৯৫ রানের বিশাল জয়। পায় প্রথমবার এশিয়া কাপ জয়ের স্বাদ। এশিয়ার সেরা হওয়ার পথে একটি ম্যাচেও হারেননি রাব্বি-শিবলিরা। অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসর শেষ করেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
আগে ব্যাট করে আশিকুর রহমান শিবলির অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ৫০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ তোলে ২৮২ রান। জবাবে ২৪.৫ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে আরব আমিরাত গুটিয়ে যায় ৮৭ রানে। কিছুটা দেখেশুনে শুরু করলেও দ্রুতই ওপেনার জিসান আলমকে হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ১৪ রানের মাথায় ওমিদ রহমানের বলে স্লিপে ধ্রুব পারাশারের হাতে ধরা পড়েন এই ডানহাতি ব্যাটার। আউটের আগে করেন ১৫ বলে সাত রান।
জিসানের বিদায়ে কিছুটা চাপে পড়লেও শিবলি-রিজওয়ানের ব্যাটে দারুণভাবে সেই চাপ সামাল দেয় বাংলাদেশ। এই দুজন মিলে গড়েন ১২৫ রানের জুটি। তবে, দলীয় ১৩৯ রানে পারাশারের বলে বাদামির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রিজওয়ান। সাজঘরে ফেরার আগে করেন ৭১ বলে ৬০ রান।
সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা আরিফুল ইসলামকে নিয়ে জুটি গড়েন শিবলি। মাঝে ১২৯ বলে আসরে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন এই ডানহাতি ব্যাটার। তার সেঞ্চুরির পরই ৩৯ বলে ফিফটির দেখা পান আরেক ব্যাটার আরিফুল। অবশ্য ফিফটি হাঁকিয়েই এলবিডব্লিউ এর ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন আরিফুল। আউটের আগে খেলেন ৪০ বলে ৫০ রানের কার্যকরী এক ইনিংস।
আরিফুলের পর দ্রুত ফেরেন আহরার আমিনও। হার্দিকের বলে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফেরেন আহরার। বাঁহাতি এই ব্যাটার পাঁচ রানের বেশি করতে পারেননি। তবে, একপ্রান্ত আগলে রেখে ১৪৯ বলে ১২৯ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেন ওপেনার শিবলি। শুরুতে নেমে ইনিংস শেষের এক বল আগে সাজঘরে ফেরেন শিবলি। অষ্টম ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে তার ইনিংসটি সাজান ১২ চার ও এক ছক্কায়। ২৮২ রানে থামে বাংলাদেশ।
আরব আমিরাতের পক্ষে আয়মান চারটি এবং ওমিদ নেন দুই উইকেট।
বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১২ রানে প্রথম উইকেট হারায় আরব আমিরাত। ওপেনার আরিয়ান শর্মাকে তুলে নেন মারুফ মৃধা। আরেক ওপেনার অক্ষত রায়কেও ফেরান মৃধা। আরব আমিরাতের মিডল অর্ডারকে ন্যূনতম প্রতিরোধ গড়ার সুযোগও দেননি আরেক বোলার রোহানাত দোলা বর্ষণ। মিডল অর্ডারের তিন ব্যাটারকে ফিরিয়ে প্রতিপক্ষের ভিত গুঁড়িয়ে দেন তিনি। যেখান থেকে আর ফিরতে পারেনি আরব আমিরাত। দলটির পক্ষে কেবল দুজন পার করেছেন দুই অঙ্কের রান। ধ্রুব ৪০ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন। ২২ বলে ১১ রান করেন অক্ষত। ১৯৫ রানের বড় ব্যবধানে হারের লজ্জায় পড়তে হয় আরব আমিরাতকে। আর বাংলাদেশ পায় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ।
বাংলাদেশের পক্ষে ২৬ রানে তিন উইকেট নেন বর্ষণ। ২৯ রানের বিনিময়ে মৃধাও করেন তিন শিকার। দুটি করে উইকেট পান ইমন ও জীবন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল : ৫০ ওভারে ২৮২/৮ (শিবলি ১২৯, জিসান ৭, রিজওয়ান ৬০, আরিফুল ৫০, আহরার ৫, শিহাব ৩, রাব্বি ২১, জীবন ১, বর্ষন ০; ওমিদ ১০-১-৪১-২, আয়মান ১০-০-৫২-৪, আফজাল ৮-০-৪৪-০, হার্দিক ৮-০-৫০-১, বাদামি ১-০-৯-০, ধ্রুব ৬-০-৩০-১, অক্ষত ৩-০-২৫-০, ইয়ায়িন ৪-০-৩০-০)
সংযুক্ত আরব আমিরাত অনূর্ধ্ব-১৯ দল : ২৪.৫ ওভারে ৮৭/১০। (শর্মা ৯, অক্ষত ১১, সুরি ৬, ধ্রুব ২৫, ইথান ৪, আফজাল ৫, ইয়াইন ৬, বাদামি ০, হার্দিক ৪, আয়মান ০, ওমিদ ৩; মারুফ ৭-০-২৯-৩, ইমন ৬-০-১৫-২, বর্ষণ ৬-২-২৬-৩, জীবন ৪.৫-১-৭-২, রাব্বি ১-০-৬-০)
ফল : বাংলাদেশ ১৯৫ রানে জয়ী।