আন্তর্জাতিক ডেস্মকঃ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লোহিত সাগরে দুটি পণ্যবাহী জাহাজকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা জানিয়েছে। এই গোষ্ঠী অবশ্য আগেই লোহিত সাগরে জাহাজের ওপর হামলা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
সোমবার হুথির মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া হামলার শিকার জাহাজগুলোকে এমএসসি ক্লারা এবং নরওয়েজিয়ান মালিকানাধীন সোয়ান আটলান্টিক হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেছেন, জাহাজ দুটির ক্রুরা তাদের কলে সাড়া দিতে ব্যর্থ হওয়ার পরে আক্রমণগুলো চালানো হয়।
সোয়ান আটলান্টিকের মালিক বলেছেন, জাহাজটিকে একটি অজ্ঞাত বস্তু দিয়ে হামলা করা হয়েছে তবে ক্রুদের কেউ আহত হয়নি। আর লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ গ্রুপের তথ্য অনুসারে, হামলার শিকার অন্য জাহাজ এমএসসি ক্লারা পানামার পতাকাবাহী জাহাজ। জাহাজটিতে হামলার বিস্তারিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অসংখ্য জাহাজে হামলা চালিয়েছে। তারা বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক আক্রমণের প্রতিবাদে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত জাহাজগুলোকে লোহিত সাগরে হামলার লক্ষ্যবস্তু করছে তারা।
এছাড়া লোহিত সাগর দিয়ে ইসরায়েলি বন্দরগুলোতে যাওয়া এবং সেখানে কর্মকাণ্ড পরিচালনার বিরুদ্ধে সমস্ত আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিকে সতর্কও করেছে গোষ্ঠীটি। এর আগে চলতি মাসেই ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত এই বিদ্রোহীরা।
টানা আড়াই মাস ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল এবং তাদের এই বর্বর হামলার মধ্যেই ইরান-সমর্থিত এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটির একের পর এক হামলা আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
হুথিরা লোহিত সাগর এবং ওই সাগরের বাব আল-মান্দেব প্রণালীতে ইসরায়েলি-সংযুক্ত বেশ কয়েকটি জাহাজ আক্রমণ চালানোর পাশাপাশি জব্দও করেছে। এই সমুদ্রপথ দিয়ে বিশ্বের বেশিরভাগ তেলবাহী জাহাজ যাতায়াত করে থাকে।
আর তাই এসব আক্রমণ লোহিত সাগরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক বাণিজ্য পথে তেল, শস্য এবং অন্যান্য পণ্যের পরিবহন নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এতে করে লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে পণ্যের বীমা এবং পরিবহনের খরচও বেড়ে গেছে।
আল জাজিরা বলছে, হুথিদের হামলার পর সোয়ান আটলান্টিকের সকল সিস্টেম স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে। যদিও আক্রমণে জাহাজটির পানির ট্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মালিক সংস্থা ইনভেন্টর কেমিক্যাল ট্যাংকার্সের প্রধান নির্বাহী অয়েস্টেইন এলগান বলেছেন।
এলগান দাবি করেন, ইনভেন্টর কেমিক্যাল ট্যাংকার্সের সঙ্গে ইসরায়েলের কোনও সম্পর্ক নেই।
জাহাজের অপারেটর ইউনি-ট্যাংকার্স বলেছে, আক্রমণের ফলে জাহাজটিতে ছোট আগুন লেগে যায়। পরে ক্রুরা সেটি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং উদ্ভিজ্জ তেল বহনকারী জাহাজটি রিইউনিয়ন আইল্যান্ডের দিকে চলে যায়।