হরতাল-অবরোধকারীরাই রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, যারা হরতাল-অবরোধ করছে তারাই ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে এসব করছে তারা।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাব ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘আপনারা জানেন একটি রাজনৈতিক দলের লোকজন হরতাল ও অবরোধের নামে জনগণের জীবন সম্পদ ধ্বংস করে চলেছে। তেজগাঁওয়ের ট্রেনে আগুন সেই প্রক্রিয়ারই অংশ বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, মরদেহের পোস্টমর্টেম দরকার হবে না। কারণ প্রত্যক্ষভাবে জানা গেছে তারা আগুন পুড়ে মারা গেছেন। এটি যেহেতু রেলওয়ের বিষয়, কমলাপুর রেলওয়ে থানায় এটির বিষয়ে মামলা হবে।
তিনি বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কোনো অবস্থাতেই পার পাবে না। অতীতেও পার পায়নি। বাস-ট্রেনে জ্বালাও-পোড়াওয়ের প্রত্যেকটি ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা স্বীকারোক্তি দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে ও রাজনীতি টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তারা এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছে।
এ ধরনের ঘটনার নির্দেশনা দেশ থেকে নাকি দেশের বাইরে থেকে আসছে- জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যারা হরতাল-অবরোধ দিচ্ছে, জ্বালাও-পোড়াও করছে, যারা নাশকতা করছে, তাদের বিদেশি নেতাদের দেশীয় এজেন্ট-অনুসারীদের দিয়ে এসব কাজা করানো হচ্ছে, যা দিবালোকের মতো স্পষ্ট।
তিনি আরও বলেন, নিহতদের মধ্যে বাকি দুজনের ডিএনএ সংগ্রহ করে অচিরেই তাদের পরিচয় জানা সম্ভব হবে। এরপর পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
ভোরে নেত্রকোণা থেকে ঢাকায় ঢোকার পথে অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার হয় মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। ভোর ৫টার দিকে তেজগাঁও স্টেশনে এ ঘটনায় পুড়ে গেছে ট্রেনটির তিনটি বগি। এর মধ্যে একটি বগি থেকে এক মা, তার শিশু সন্তানসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
যাত্রীদের বরাত দিয়ে তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, ট্রেনটি বিমানবন্দর স্টেশন পার হওয়ার পর যাত্রীরা বগিতে আগুন দেখতে পান। তারা চিৎকার শুরু করলে চালক ট্রেনটি তেজগাঁও স্টেশনের কাছাকাছি থামান। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে।
নিহত চারজনের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুইজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- নাদিরা আক্তার পপি এবং তার ৩ বছরের ছেলে ইয়াসিন। বাকি দুজনের নামপরিচয় জানা যায়নি। তাদের মরদেহ মর্গে রয়েছে।