ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে প্রথমবারের মতো ওয়ানডেতে পরাজয়ের স্বাদ দিয়েছে বাংলাদেশ। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর হাফ-সেঞ্চুরিতে ২০৯ বল হাতে রেখেই সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে কিউইদের বিপক্ষে ৯ উইকেটের জয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে টাইগাররা।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) হোয়াটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্যে টস জিতে কিউইদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। ব্যাট করতে নেমে টাইগার পেসারদের তাণ্ডবে মাত্র ৯৮ রানেই গুটিয়ে যায় ব্ল্যাক-ক্যাপসরা। জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫ দশমিক ১ ওভারেই ৯ উইকেটের বড় জয় তুলে নিয়েছে শান্ত বাহিনী।
কিউইদের ছুঁড়ে দেওয়া অল্প পুঁজি তাড়া করতে নেমে সাবধানী শুরু করেছিলেন দুই টাইগার ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও সৌম্য সরকার। তবে ব্যাট হাতে নামার পর থেকেই কিছুটা চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন সৌম্য। একবার চোখে পানি নেওয়ার পর ড্রপও দেওয়া হয়। তবে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করায় মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন এই ওপেনার। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১৬ বলে ৪ রান।
সৌম্য ফিরলে সাবলীল ব্যাটিংয়ে বাকি কাজটা সারেন বিজয় ও ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শান্ত। তবে দলের জয় নিশ্চিত হওয়ার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন বিজয়। উইলিয়াম ও’রর্ককের লাফিয়ে ওঠা বলে উইকেটের পেছনে টম ব্লান্ডেলকে ক্যাচ দিয়ে ৩৭ রানে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার।
বাকি সময়টা দেখেশুনে খেলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন শান্ত ও লিটন। দলের এমন স্মরণীয় জয়ের দিনে নিজের ফিফটিও তুলে নেন টাইগার দলপতি। অন্যদিকে এক রানে অপরাজিত ছিলেন লিটন।
এর আগে, টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই ধাক্কা খায় কিউইরা। নিজের ওভারের শেষ বলে কিউই ওপেনার রাচিন রবীন্দ্রকে উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তানজিম সাকিব। দলীয় ২২ রানেই ২ উইকেট হারায় কিউইরা। নিজের চতুর্থ ওভারে এসে হেনরি নিকোলসকে টপ-এজের ফাঁদে ফেলেন সাকিব।
এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ব্ল্যাক-ক্যাপসরা। তৃতীয় উইকেটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন টম লাথাম ও উইল ইয়াং। তবে এই জুটিকেও থিতু হতে দেননি শরিফুল। তার গুড লেন্থের ডেলিভারিতে ইনসাইড এজে ব্যক্তিগত ২১ রানেই বোল্ড লাথাম।
এরপর দ্রুতই ফেরেন মার্ক চ্যাপম্যানও। শরিফুলের ফুলার লেন্থে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় তাকে।
চ্যাপম্যানের পর টম ব্লান্ডেলকেও বেশিক্ষণ টিকতে দেননি সাকিব। ৪ রানে এই ব্যাটারকে মিরাজের ক্যাচ বানিয়েছেন ডানহাতি এই পেসার।
এরপর বাকিটা সময় চমক দেখিয়েছেন সৌম্য সরকার। লোয়ার অর্ডারের তিন ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন এই পেস অলরাউন্ডার। শুরুটা কস ক্লার্কসনকে বোল্ড করে। এরপর মিলনেকে বোল্ড এবং আদি অশোককে উইকেটের পেছনে মুশির ক্যাচ বানিয়েছেন সৌম্য।
শেষবেলায় কিউইদের শেষ ব্যাটার উইলিয়াম ও’রর্ককে বোল্ড করে কিউইদের ৯৮ রানেই অলআউট করে দেন ফিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউজিল্যান্ড: ৩১.৪ ওভারে ৯৮/১০ (ইয়াং ২৬, রাচিন ৮, নিকোলস ১, লাথাম ২১, ব্লান্ডেল ৪, চাপম্যান ২, ক্লার্কসন ১৬, মিলনে ৪, অশোক ১০, ডাফি ১, উইলিয়াম ১; শরিফুল ৭-০-২২-৩, সাকিব ৭-২-১৪-৩,মুস্তাফিজ ৭.৪-০-৩৬-১, সৌম্য ৬-১-১৮-৩, মিরাজ ১-০-৩-০, রিশাদ ৩-০-৪-০)
বাংলাদেশ : ১৫.১ ওভারে ৯৯/১ (সৌম্য ৪ (রিটায়ার্ড হার্ট), বিজয় ৩৭, শান্ত ৫১* , লিটন ১* ;মিলনে ৪-০-১৮-০, ডাফি ৫-০-২৭-০, ক্লার্কসন ২-০-১৯-০, উইলিয়াম ৪-০-৩৩-১, অশোক ০.১-০-২-০)
ফলাফল : বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ : নিউজিল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে জয়ী।