বছরের শুরুতেই শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা

Date: 2023-12-26
news-banner
দেশের কিছু অঞ্চলে এক দফা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ছাড়া এবারের শীতের আমেজ এখনো পুরোপুরি অনুভূত হয়নি। উত্তরাঞ্চলে শীতের প্রকোপ থাকলেও রাজধানীসহ দেশের বড় অংশে এখনো শীতের দেখা মিলেনি। তবে আগামী মাসের শুরুতে অর্থাৎ নতুন বছরে চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী কয়েক দিন মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের অন্যান্য এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা থাকবে।

সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তবে দেশের অন্যান্য জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে এবার শীত তেমন পড়বে না বলে আগেই আভাস দিয়েছিলেন আবহাওয়াবিদরা। ফলে ডিসেম্বরেও শীতের প্রকোপ নেই দেশে। বিগত কয়েক বছরের ডিসেম্বরেও রাজধানীর ঢাকার রাতের তাপমাত্রা থাকত ১২ ডিগ্রির আশেপাশে। এখন তা ১৬ ডিগ্রির নিচে নামছেই না। কখনো কখনো থাকছে এরচেয়েও বেশি।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গত বছরের ডিসেম্বরে বেশ কয়েকটি জায়গায় শৈত্যপ্রবাহ হলেও এবার কেবল দেশের সর্বউত্তরের অঞ্চল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নেমেছিল ৯ এর নিচে।

গত বছরের (২০২২ সালে) ২৪ ডিসেম্বর দেশের উত্তরের জেলায় নওগাঁ ও পঞ্চগড়ের ওপর দিয়ে বইছিল শৈত্যপ্রবাহ। সেদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তেঁতুলিয়া ও বদলগাছিতে ছিল এই তাপমাত্রা। এছাড়া প্রায় আট অঞ্চলের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি ছিল। সৈয়দপুর ও দিনাজপুরে ১০ দশমিক ২, ঈশ্বরদীতে ১০ দশমিক ৩, বরিশালে ১০ দশমিক ৪, চুয়াডাঙ্গা, তাড়াশ ও রাজশাহীতে ১০ দশমিক ৫, মাদারীপুরে ১০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।

এক বছর পর একই দিনে, অর্থাৎ এ বছর ২৪ ডিসেম্বর দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ১১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া দিনাজপুরে ১৩ দশমিক ১, বদলগাছিতে ১২ দশমিক ৫, রাজশাহীতে ১৩ দশমিক ২, সৈয়দপুরে ১৪ দশমিক ৩ এবং যশোরে ১৫ দশমিক ৬, ঈশ্বরদীতে ১৩ দশমিক ২, বরিশালে ১৪ দশমিক ৬, মাদারীপুরে ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রার রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছিল এ বছরেরই জুন মাসে। আমেরিকা ও ইউরোপের মতো শীতপ্রধান জায়গায় তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করেছে মানুষ। বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা উচ্চতম রেকর্ড ছুঁয়েছে যার একটা প্রধান কারণ ছিল ‘এল নিনো’ নামে প্রাকৃতিক আবহাওয়া চক্র। এই ‘এল নিনো’ ও একই সাথে বিশ্বের বাড়তে থাকা তাপমাত্রার প্রভাবে এবারের শীতকালটা আগের তুলনায় কিছুটা উষ্ণ হওয়ার কথা জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

এল নিনো সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে যে অবস্থাটা মে মাস পর্যন্ত দীর্ঘায়িত হতে পারে এবং এল নিনো সক্রিয় থাকা অবস্থায় স্বাভাবিকের চেয়ে সাধারণত বেশি তাপমাত্রা দেখা যায়, বলছিলেন আবহাওয়া অধিদফতরের আবুল কালাম মল্লিক। প্রতি তিন থেকে সাত বছরের মধ্যে একবার এই এল নিনো দেখা দেয় - যখন তাপমাত্রা ঊর্ধমুখী হয়।

আবহাওয়া অধিদফতরের ৩০ বছরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার গড় হিসেবে স্বাভাবিকভাবে ডিসেম্বর মাসে সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ১৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে। এবছর ডিসেম্বর মাসে সর্বনিম্ন গড় তাপমাত্রা ১৪.৫ ডিগ্রি থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করতে পারে বলে ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
image

Leave Your Comments