আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, তিনি কারও কাছে মাথা নত করেন না, করবেও না।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেল পৌনে ৪টায় ফরিদপুর পৌরশহরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ৭১-এ মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। তাদের সালাম জানাই। আপনাদের আত্মত্যাগে আমাদের দেশকে পেয়েছি। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। দেশ স্বাধীন হয়। ইয়াহিয়ার পতন হয়। ভুট্টু ক্ষমতায় আসে। আন্তর্জাতিক চাপে বাধ্য হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে। ‘তিনি দেশে ফিরে এক যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ দেখেন। রাস্তা ঘাট নেই। সবই ভাঙা। এ দেশে যুদ্ধকালীন সময় ফসল হয়নি, গোলায় এক ফোটা ধান ছিল না। কারণ, পাকিস্তানিরা আগুন দিয়ে গ্রামের পর গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এক পয়সাও রিজার্ভ ছিল না। শূন্য হাতে ধ্বংস স্তূপে দাঁড়িয়ে একটার পর একটা গড়তে শুরু করেন জাতির পিতা। তিন বছর সাত মাসে জাতিসংঘে দেশকে স্বীকৃতি এনে দিয়েছেন তিনি,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।
সরকার প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার হবে না। অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতি হন জিয়াউর রহমান। দেশের বাইরে রিফিউজি হিসেবে আমাদের থাকতে হয়েছিল। ছয় বছর পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার সুযোগ পাই। সমস্ত দেশে ঘুরে বেড়াই। দেশের উন্নয়নে কাজ করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাই। আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলেই সরকার গঠন করে দেশ সেবার সুযোগ পেয়েছি। ২১ বছর পর সরকারে এসেছি। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি। বিদ্যুৎ চাহিদা ৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করি। মানুষের জীবনে স্বস্তি ফিরে আসে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসে। তারা ক্ষমতায় আসা মানে দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, লুটপাট আর দুঃশাসন। গ্যাস বিক্রি করতে দেইনি বলে আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেয়নি। ২০০৮ সালে ফের ক্ষমতায় আসি। বিএনপি ১০১৪ সালে নির্বাচনে আসেনি। আর ২০১৮ সালে প্রার্থীর মনোনয়ন বাণিজ্য করে নিজে থেকে সরে যায় তারা। তবে আওয়ামী লীগ ১৫ বছর সরকারে আছে। দেশের উন্নয়ন করেছে।
দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। ৮ হাজারের বেশি ডিজিটাল সেন্টার করেছি। প্রত্যেকের হাতে মোবাইল ফোন দিয়েছি। ব্রডব্যান্ড চালু করেছি। ওয়াইফাই এনে দিয়েছি। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার ঘরে বসে উপার্জন করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। কোরোনায় আমি বসে থাকিনি অনলাইনে সভা করেছি।
৩৩ টি জেলা ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হয়েছে। ৮ লাখ ৪১ হাজারেরও বেশি পরিবার ঘর পেয়েছে। আমরাই বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করেছি। স্বামী পরিত্যক্তা ও বিধবা ভাতা দিচ্ছি। সারাদেশে বিনামূল্যে বই দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। প্রাইমারি থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি দিচ্ছি।
এর আগে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে সভামঞ্চে ওঠেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় নৌকার প্রার্থীরা এবং দলের নেতারা তাকে স্বাগত জানান।