জানুয়ারির প্রথম থেকেই বাড়তে শুরু করেছে শীতের প্রকোপ। পৌষের শেষ সময়ে এসে শীত জেঁকে বসেছে সারাদেশে। শীতের কাঁপুনি থেকে বাদ যায়নি রাজধানী ঢাকাও। তবে শুধু বাংলাদেশ না, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই তীব্র শীতের কবলে পড়েছে। বিভিন্ন দেশে পূর্বের তুলনায় আরও বেশি তাপমাত্রা কমেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হেনেছে শীতকালীন ঝড়। শুক্রবার আঘাত হানা ঝড়ের কারণে মিশিগান এবং উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের আড়াই লাখের বেশি গ্রাহক বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। বাতিল ও বিলম্বিত হয়েছে হয়েছে হাজার হাজার ফ্লাইট।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ঝড়ো বাতাস ও ভারী তুষারপাতের কারণে বাতিল করা হয়েছে দুই হাজারের বেশি ফ্লাইট। এছাড়া শিকাগোর ও’হারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ যুক্তরাষ্ট্রে শুক্রবার ৭ হাজার ৬শ’ টিরও বেশি ফ্লাইট বিলম্বিত হয়েছে। মধ্যপশ্চিম ও দক্ষিণে ফ্লাইট বিলম্ব এবং বাতিলের কারণে শত শত যাত্রী মার্কিন বিমানবন্দরে আটকা পড়েন।
এদিকে তীব্র ঠান্ডা এবং ঘন কুয়াশার মুখোমুখি হয়েছে ভারতের উত্তরাঞ্চল। রাজধানী দিল্লিতে তাপমাত্রা ৩ ডিগ্রিতে নেমেছে। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে ছিল মৌসুমের সবচেয়ে শীতল রাত। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩ ডিগ্রির কাছাকাছি। এমন আবহাওয়ার কারণে কয়েকটি রাজ্যে জারি করা হয়েছে রেড এলার্ট।
শীত শুরু হতেই তীব্র ঠান্ডার মুখোমুখি হয়েছে চীন। দেশটি চরম শৈত্যপ্রবাহের মুখোমুখি হয়েছে। সম্প্রতি রাজধানী বেইজিংয়ে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে শূন্য়ের নিচে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ১৯৫১ সালের পর শহরটিতে এত ঠান্ডা পড়েনি। উত্তর ও উত্তরপূর্ব চীনের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হয়। সেখানে কিছু জায়গায় তাপমাত্রা -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়।
চীনের আবহাওয়া অফিস দেশের ৭৮টি আবহাওয়া কেন্দ্র থেকে রিপোর্ট নিয়ে সম্প্রতি জানিয়েছে, এবার রেকর্ড ঠান্ডা পড়েছে। গোটা চীনকে ধরলে ১৯৬১ সালের পর থেকে এত ঠান্ডা আর পড়েনি।
তুষারপাত, বরফ আর হাড় কাঁপানো বাতাসে বিপর্যস্ত ইউরোপের বিভিন্ন এলাকা। জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং রাশিয়াসহ ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে দেখা দিয়েছে তীব্র তুষারপাত। সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে রাশিয়া। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রা গ্রাস করেছে পুরো দেশকে। রেকর্ড তুষারপাতে যেন বরফের কম্বলের নিচে চাপা পড়ে মস্কো।
এছাড়াও কানাডা, মঙ্গোলিয়া, স্কটল্যান্ড, পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতেও অন্যবারের তুলনায় ঠান্ডা ও তুষারপাত বেড়েছে। বিশ্বজুড়ে এমন শীতল অবস্থায় অসহায় মানুষদের সমস্যা বহুগুণে বেড়ে গেছে।
বিশ্লেষকরা বলেছেন যে, ফ্রান্স এবং জার্মানিতে সাম্প্রতিক ঠান্ডা শস্যক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ হতে পারে। ভারী বর্ষণের কারণে এই বছর ফসল বপন করতে দেরি হয়েছে, আর ফসল ওঠাতেও দেরি হচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা, এনডিটিভি ও ব্যারনস