বাসা থেকে বের করে দেওয়ায় ৫ জনকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা

Date: 2024-01-20
news-banner
ঢাকার দোহার এলাকায় একই পরিবারের পাঁচজনকে বাড়িতে তালাবদ্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০। তারা হলেন-মূল পরিকল্পনাকারী রুবেল (২১) ও তার সহযোগী রানা মাহমুদ (২৪)। বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনার নেপথ্যের কারণে বেরিয়ে এসেছে।

মূলত গ্রেফতার রুবেল ভুক্তভোগীর বাসায় থাকতেন। কিন্তু তার আচার আচরণ পছন্দ না হওয়ায় তাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই ক্ষোভে রুবেল পরিবারটিকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনা করেন এবং সেই মোতাবেক তার সহযোগীকে নিয়ে আগুনও দেন। কিন্তু ভাগ্যক্রমে সেদিন বেঁচে যান একই পরিবারের পাঁচজন সদস্য।

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে মুন্সিগঞ্জের শ্রীপুরের র‌্যাব-১০ এর ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার সহকারী পুলিশ সুপার এ.কে.এম কাউসার চৌধুরী এ ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে আলোচিত এ ঘটনার নেপথ্যের কারণ তুলে ধরে কমান্ডার জানান, গ্রেফতার রুবেল পেশায় একজন চালের টিনের মিস্ত্রি। তিনি ভুক্তভোগী জুলহাসকে দুঃসম্পর্কের মামা বলে মানতেন। সেই সুবাদে দীর্ঘদিন ধরে তার বাসায় ভাড়া ছিলেন। রুবেল অত্যন্ত দুষ্ট প্রকৃতির লোক। এছাড়াও তার কথাবার্তা ও চালচলন জুলহাস উদ্দিনের কাছে অপছন্দ ছিল। ফলে দুই সপ্তাহ আগে রুবেলকে তিনি বাসা থেকে চলে যেতে বলেন। এটা নিয়ে রুবেল জুলহাসের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায় রুবেল জুলহাসকে পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে বাসা থেকে চলে যান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, গত ১৬ জানুয়ারি মধ্যরাতে জুলহাসের পরিবারের সদস্যরা ঘুমিয়ে পড়েন। ওই সময় রুবেল তার সহযোগী রানাসহ অন্যদের নিয়ে পরিকল্পিতভাবে জুলহাসের বাড়ির বাইরে তালা লাগিয়ে দেন। এরপর বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যাচেষ্টা করেন। এরপর মামলা হলে রুবেল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। যা তিনি র‌্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর স্বীকার করেছেন।


সেদিনের ঘটনা জানিয়ে র‌্যাবের কমান্ডার বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি গভীর রাতে ঢাকার জেলার দোহারের ধীৎপুর এলাকার জুলহাস উদ্দিন শেখ, তার স্ত্রী ফাহিমা আক্তার, ১২ বছরের মেয়ে জান্নাত, ৯ বছরের ছেলে জুনায়েদ ও ৯ বছরের ভাতিজি তাবাসসুমসহ ঘুমিয়ে পড়েন। তারা মধ্যরাতে বাসায় আগুন দেখতে পান। পরে ঘর থেকে বের হওয়ার চেষ্টাও করেন। কিন্তু দেখতে পান বাহির থেকে তাদের ঘরে তালা দেওয়া হয়েছে। এরপর জুলহাস ও তার পরিবারের লোকজন চিৎকার শুরু করেন। পরে আশপাশের লোকজন এসে তাদের টয়লেটের ভেন্টিলেটর কেটে বের করেন। ভাগ্যক্রমে সেদিন তারা প্রাণে রক্ষা পান। কিন্তু জুলহাসের স্ত্রী মুখ ও হাত পুড়ে যায়। এছাড়া তার বাচ্চারা ধোঁয়ায় আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় জুলহাসের ভাই বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় র‌্যাব।
image

Leave Your Comments