গর্ভবতী নারীদের খেঁজুর খাওয়া কতটা জরুরী

Date: 2024-07-01
news-banner
নারীদের গর্ভকালীন অনেক খাবারের চাহিদা থাকে। এগুলো অধিকাংশই একজন গর্ভবতী নারীর জন্যে জরুরী। গর্ভাবস্থায় নারীদের মধ্যে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনও আসে। এই সময় প্রত্যেক নারীকেই এমন কিছু খাবার খেতে হয় যা তার ও অনাগত সন্তানের স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। খেঁজুর তেমনই একটি পুষ্টিকর ও উপকারী খাবার, যা গর্ভাবস্থায় নারীদের খাওয়া জরুরী।

গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার প্রচলন নতুন নয়। একটা সময় যখন চিকিৎসাসেবা এতটা সহজলভ্য ছিল না, তখনো কিন্তু গর্ভবতী নারীদের খেঁজুর খাওয়ার অভ্যাস ছিল। এর বড় কারণ হলো, গর্ভাবস্থায় নিয়মিত এটা খেলে লেবার পেইন অনেকটা কম হয়।আর মনগড়া কোনো কথা নয়, বরং অনেকগুলো গবেষণা শেষে এমন তথ্যই জানিয়েছেন গবেষকরা। গর্ভাবস্থায় খেঁজুর খেলে তা  ইউটেরাসের সংবেদনশীলতা কমিয়ে তাকে শক্তিশালী করে। এতে প্রসব ব্যথা অনেকটাই কম হয়।

খেঁজুর নিয়ে গবেষণা কী বলছে: আমেরিকার ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, গর্ভাবস্থার পয়ত্রিশ সপ্তাহ পর থেকে প্রতিদিন ছয়টি করে খেঁজুর খেলে তা মা ও অনাগত শিশুর জন্য বেশ উপকারী হয়। সেইসঙ্গে সন্তান জন্ম দেওয়াও অনেকটা সহজ হয়ে যায়। গবেষণায় তারা দেখেছেন, যেসব নারী গর্ভাবস্থায় খেঁজুর খেয়েছেন তাদের সার্ভিক্স অনেক বেশি ফ্লেক্সিবল ছিল, যে কারণে সন্তান প্রসব করা অনেক সহজ ছিল। খেজুর খেলে তা লেবারের সময়ও কমিয়ে দেয়, ফলে মাকে কষ্ট কম পেতে হয়।

প্রসবকালীন বেদনা কমায়: খেঁজুরে থাকে উপকারী ফ্যাটি অ্যাসিড। এই উপাদান প্রসবের সময়ে সারভাইক্যাল মাসল ফেলিক্সিবল করে ও কমনীয় করে তোলে, যে কারণে প্রসব বেদনা অনেকটাই কম অনুভূত হয়।

গর্ভবতীর প্রসবপ্রক্রিয়া স্বাভাবিক করে: গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এসে প্রতিদিন ৬০-৮০ গ্রাম খেঁজুর খেলে সার্ভিক্স মজবুত হয়। এর ফলে কৃত্রিমভাবে কিংবা ওষুধ ‍দিয়ে প্রসব ব্যথা সৃষ্টি করার দরকার হয় না। এই প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবেই ঘটে থাকে।

কার্বোহাইড্রেটস: খেঁজুরে থাকে প্রচুর কার্বোহাইড্রেটস। এছাড়াও থাকে ফ্রুক্টোজ এবং সুক্রোজ, যা শরীরে শক্তি যোগায়। এছাড়া এই ফলে গ্লুকোজও থাকে পর্যাপ্ত, যা গর্ভাবস্থায় ধরে রাখা খুব বেশি জরুরী। তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খেঁজুর খাওয়া খুবই ভালো। 

গর্ভাবস্থায় দ্রুত রক্ত উৎপাদন করে: সন্তান প্রসবের সময় শরীর থেকে অনেক রক্ত বের হয়ে যায়। এর ফলে মায়ের শরীর দুর্বল হয়ে যায়। গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবের পরে নিয়ম করে খেঁজুর খেলে তা শরীরে দ্রুত রক্ত উৎপাদন করে। এতে মা তার হারানো শক্তি বেশ দ্রুত ফিরে পান।

গর্ভবতী নারীর বাড়তি শক্তি যোগ করে: সন্তান প্রসবের আগে এবং প্রসবের সময় একজন নারীর অনেক বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়। সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য প্রয়োজন পড়ে অতিরিক্ত শক্তির। খেঁজুরে থাকে অনেক বেশি নিউট্রিয়েন্টস। যে কারণে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খেঁজুর খেলে গর্ভবতী মায়ের শরীরে বাড়ে শক্তির মাত্রা। সেজন্য প্রসবের সময় বাড়তি শক্তির যোগান সে সহজেই দিতে পারে।
image

Leave Your Comments