ইন্টারনেট বন্ধে যে আইন

Date: 2024-08-18
news-banner
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা ইউএনএইচআরসির  ২০১২ সালে এক রেজল্যুশনে বলা হয়, ‘অফলাইনে মানুষের যেসব অধিকার রয়েছে, অনলাইনেও সেগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে, বিশেষত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ে।’ পরে ২০১৬ সালে ইউএনএইচআরসি ইন্টারনেট ব্যবহারের বাধা দানকারী সব ধরনের পদক্ষেপকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে নিন্দা জানায়।

২০২০ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট অনুরাধা ভাসিন বনাম ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া মামলার রায়ে ইন্টারনেট বন্ধে সরকারের ক্ষমতাকে সীমিত করে দেন। রায়ে বলা হয়, মতপ্রকাশ এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে ইন্টারনেট ব্যবহার সাংবিধানিক সুরক্ষা পাওয়ার যোগ্য। মতপ্রকাশের অধিকার হরণের উদ্দেশ্যে ইন্টারনেট বন্ধ করা যাবে না। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ইন্টারনেট বন্ধ করতে হলেও আনুপাতিকতা ও প্রয়োজনীয়তার শর্ত পূরণ করতে হবে। ইন্টারনেট বন্ধের প্রতিটি আদেশ প্রকাশ করতে হবে এবং সাত দিনের মধ্যে মুখ্য সচিবের নেতৃত্বাধীন কমিটির মাধ্যমে যৌক্তিকতা পর্যালোচনা করতে হবে। সেই সঙ্গে বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার সুযোগ থাকবে, ভুক্তভোগীরাও ইন্টারনেট বন্ধের যৌক্তিকতা আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১-এর ৯৭ ধারা অনুসারে, রাষ্ট্রপতি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলে অথবা ‘সরকারের বিবেচনায় রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে’ সরকার মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করার আদেশ দিতে পারে। মোবাইল অপারেটর ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডের লাইসেন্সের শর্তেও সরকারের নির্বাহী আদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধের শর্ত থাকে, যা তারা পালন করতে আইনগতভাবেই বাধ্য থাকে। ২০০১ সালের মূল আইনে শুধু জরুরি অবস্থার সময় ইন্টারনেট বন্ধের ক্ষমতা থাকলেও ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক সংশোধনীর মাধ্যমে ৯৭ ধারায় ‘সরকারের বিবেচনায় রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে’ কথাগুলো যুক্ত করা হয়।
image

Leave Your Comments