ইয়াছিন আরাফাত: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে দলবলসহ সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়েছেন।
বৃস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে এমপি মোস্তাফিজ ও তার সমর্থকদের কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা জানান, বেলা ১১টার দিকে নেতাকর্মী নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মোস্তাফিজুর। এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সাংবাদিকরা তাকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন।
একপর্যায়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি এত লোক নিয়ে মনোনয়ন দাখিল করতে এসেছেন, এটা তো নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন।’ এমন প্রশ্ন করার সঙ্গে সঙ্গে মোস্তাফিজ উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং ওই সাংবাদিককে থাপ্পড় দিয়ে শার্টের কলার ধরেন।
এর প্রতিবাদ করায় চ্যানেল আইয়ের বিভাগীয়প্রধান চৌধুরী ফরিদসহ একাধিক সাংবাদিককে তিনি ধাক্কা দেন। এ সময় টিভি ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ও ট্রাইপডসহ সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ব্যবহৃত কিছু সরঞ্জামও ভাঙচুর করে মোস্তাফিজ ও তার লোকজন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, এখানে সিসি ক্যামেরা আছে ৷ ক্যামেরায় সব দেখার সুযোগ আছে। কোনো প্রার্থী যদি আচরণবিধি ভঙ্গ করে বা কারও সঙ্গে কোনোপ্রকার ঝামেলায় জড়ান, সেটা আমরা দেখব।
তিনি আরও বলেন, যাদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটেছে আপনারা লিখিত অভিযোগ দেন। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাবে। শুধু সংবাদকর্মী নন, যে কেউ এরকম ঘটনার শিকার হলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমি এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।
এ ঘটনার প্রতিবাদে কর্মরত সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ হিসেবে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এরপর জেলা প্রশাসকের কক্ষে গিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেন। এক বিবৃতিতে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘটনার নিন্দা জানান।
প্রসঙ্গত, মোস্তাফিজুর রহমান চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। এর আগেও সাংবাদিককে ফোন করে তার গালিগালাজের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল।
এছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে ‘অশালীন’ মন্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হওয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য, তার বিরুদ্ধে আয়োজিত মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা, বাঁশখালীতে নিজ দলের বিরোধী নেতা-কর্মীদের দমনপীড়ন, প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মিছিল করার অভিযোগ রয়েছে এমপি মোস্তাফিজের বিরুদ্ধে।