বিশ্ব ডেস্কঃ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে আফগানিস্তান, চীন, হাইতি, ইরানসহ বিশ্বের ১৩টি দেশের ৩৭ ব্যক্তির ওপর ভিসা ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় (ট্রেজারি) এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
আগামী ১০ডিসেম্বর রবিবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) এই পদক্ষেপ নেয় মার্কিন প্রশাসন।
এ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের পর ওই ৩৭ ব্যক্তির ওপর যুক্তরাজ্য এবং কানাডাও জারি করেছে এই নিষেধাজ্ঞা। বিষয়টি বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন আফগানিস্তানের দুই মন্ত্রী। আমেরিকার অভিযোগ, তারা মেয়েদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ বন্ধ করার কারণে নারী নিপীড়নে জড়িত রয়েছেন। মূলত নারী, তরুণী ও কিশোরীদের দমনপীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত তালেবান নেতা ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, বেত্রাঘাত এবং মারধোরের অভিযোগও রয়েছে।
তালেবান প্রশাসনের কোনো মুখপাত্র এ প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি।
এছাড়া ইরানের দুই গোয়েন্দা কর্মকর্তা রয়েছেন এই তালিকায়। তারা হলেন- মাজিদ দাস্তজানি এবং মোহাম্মদ মাহদি খানপুর আরদেস্তানি। এই দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, ২০২০ সালে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত জেনারেল কাসেম সোলায়মানি হত্যার প্রতিশোধ নিতে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন মার্কিন ঘাঁটিতে নজরদারি ও হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছিলেন তারা।
চীনের দুজন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা হলেন, গাও কি এবং হু লিয়ান হে। দুজনই চিনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ জিনজিয়াংয়ের সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যম সারির কর্মকর্তা। প্রদেশটিতে বসবাসরত সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের নির্যাতন নিপীড়ণের অভিযোগে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ইরান, আফগানিস্তান, চীন, হাইতি ছাড়াও নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ৩৭ ব্যক্তির তালিকায় লাইবেরিয়া, দক্ষিণ সুদান, উগান্ডা, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের রাজনৈতিক নেতা ও সামরিক কর্মকর্তারা রয়েছেন।
ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো দাপ্তরিক কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকায় জাতিসংঘে ইরানি মিশনের কর্মকর্তাদের কাছে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিল রয়টার্স। তবে তাদের কেউই মন্তব্য করতে চাননি।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সম্পদ ভোগদখল করতে পারবে না। সে দেশের কোনো ব্যাংকে থাকা অর্থ তুলতে পারবেন না। এছাড়া মার্কিন নাগরিকদের সঙ্গে ব্যবসা ও লেনদেনে করতে পারবে না।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং মার্কিন অর্থব্যবস্থাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের থেকে নিরাপদ রাখার প্রতিশ্রুতি পূরণে যুক্তরাষ্ট্র কতটা অঙ্গীকারবদ্ধ তা এই নিষেধাজ্ঞায় প্রতিফলিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন।