প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নারীরা স্বাবলম্বী হলে পরিবার ও সমাজে তার অবস্থান সুদৃঢ় হয়। সব জায়গায় তার কথার মূল্যায়ন হয়। আমরা বলতে পারি, এরই মধ্যে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন অনেকাংশে পূরণ করতে পেরেছি।’
আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়া পদক ২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অনেক অবদান আছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারীরা যেমন ট্রেনিংয়ে গেছে, তেমনি যুদ্ধক্ষেত্রেও সহযোগিতা করেছে। তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নানা নির্যাতনের শিকার হন। অনেকে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। পাকিস্তান আমলে নারীদের অনেক বাধা ছিল। সেসময় নারীদের কর্মক্ষেত্রে কোনো সুযোগ দেওয়া হতো না।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নারীদের সেই সুযোগ দিয়েছেন। আইনেই ছিল জুডিসিয়ারিতে মেয়েরা যোগ দিতে পারবে না। জাতির পিতা আইন পরিবর্তন করেন। পরে আমি এসে এটির পথ আরও সুগম করে দেই। নাজমুন আরা আপিল বিভাগেও যান। আমার একটা আফসোস রয়ে গেছে, আমার ইচ্ছে ছিল, প্রধান বিচারপতিও নারীকে করব, কিন্তু পারিনি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বেগম রোকেয়া নিজের স্বামীর নামে স্কুল করেছেন। সেখানে ছাত্রী পাওয়া যেত না। তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রী সংগ্রহ করতেন। সেখানেও নানা বাধার সম্মুখীন হন। তিনি তার লেখায় উল্লেখ করেছেন, যাহা পুরুষ পারিবে, তাহা নারীও পারিবে।’
সমাজ, নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়নে অসামান্য অবদানের জন্য পাঁচজন নারীকে বেগম রোকেয়া পদক-২০২৩ প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পদক গ্রহীতা পাঁচজন হলেন—নারী শিক্ষার জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রথম নারী উপাচার্য অধ্যাপক খালেদা একরাম (মরণোত্তর), নারী অধিকারের জন্য রংপুরের প্রখ্যাত প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আখতার, নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদানের জন্য নেত্রকোনার কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা, পল্লী উন্নয়নের জন্য ঠাকুরগাঁওয়ের রনিতা বালা ও লক্ষ্মীপুরের নিশাত মজুমদার (পর্বতারোহী)।
বেগম রোকেয়া দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।