দেশের বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। প্রতি বছরের মতো এবারও মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
পাশাপাশি এবছর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে। যা থেকে উৎপাদন হবে প্রায় ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ।
এই মুড়িকাটা ও গ্রীষ্মকালীন নতুন পেঁয়াজ খেত থেকে তোলা ও বাজারে আসা শুরু হয়েছে এবং বাজারে থাকবে ৩ থেকে সাড়ে তিন মাস।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, চলতি বছরের জুলাই থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ৫ লাখ ৭১ হাজার ৫৩৪ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। যা গতবছরের একই সময়ের তুলনায় ১ লাখ ৫৫ হাজার ২২৪ টন বেশি। গত বছর এই সময়ে আমদানি হয়েছিল ৪ লাখ ১৬ হাজার ৩১০ টন পেঁয়াজ। এদিকে দেশে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ভারত থেকে ৫২ হাজার টন পেঁয়াজ আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরইমধ্যে ভারতে বাংলাদেশ দূতাবাসকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা হায়দার আলী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ভারতীয় দূতাবাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে চিঠি পাঠানো হয়েছে। প্রাইভেট সেক্টরের ৫২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির এলসি খোলা আছে। সেগুলো যাতে ছাড়া হয় সে বিষয়ে তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রুতই এসব পেঁয়াজ দেশে আসবে।
এ ছাড়া ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ভারত থেকে আমদানির লক্ষ্যে ঋণপত্র (এলসি) খোলা ৫ হাজার টন পেঁয়াজের মধ্যে ১৬ হাজার টন ইতোমধ্যে দেশে এসেছে। বাকি ৩ হাজার ৪০০ টন পেঁয়াজ দ্রুত ছাড় করিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে জানান হায়দার আলী।
গত বৃহস্পতিবার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। তবে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে সেখান থেকে বাংলাদেশে ৫২ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়। এখন এই পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।
এদিকে রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ভারত রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই সেখান থেকে আমদানির জন্য ৫২ হাজার টন পেঁয়াজের এলসি খোলা হয়। এই পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। কীভাবে বিকল্প দেশ থেকে পেঁয়াজের আমদানি বাড়ানো যায়, সে চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে টিসিবির মাধ্যমে স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে পেঁয়াজ বিক্রি অব্যাহত থাকবে।
দেশের মানুষ কষ্ট পায় এমন কিছু করা ঠিক হবে না উল্লেখ করে তিনি ব্যবসায়ীদের আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহবান জানান। সরকারের এই জ্যেষ্ঠ সচিব বলেন, কেবল সরকার সব ঠিক করে দেবে এমন ভাবাটা ঠিক নয়। ব্যবসায়ীদের বুঝতে হবে দেশের জনগনের জন্যই ব্যবসা। তিনি বলেন, ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করল আর দেশে একদিনের ব্যবধানে পণ্যটির দাম হঠাৎ করে বেড়ে গেলো! এটা ব্যবসায়ীদের দায়িত্বশীল আচরণ নয়।