গুলশান থানায় করা নাশকতার এক মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ১১ নেতা-কর্মীকে আড়াই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর আগে সকালে তেজগাঁও থানার এক মামলায় ১৮ জনকে আড়াই বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আজ সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান এ রায় দেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মামুন চৌধুরী, বিল্লাল হোসেন, ওয়াসিম খান, নুরুল ওরফে নূর হোসেন, শরীফউদ্দিন ওরফে মামুন, ওয়াহিদুল ইসলাম শাহীন, রফিকুল ইসলাম, সিদ্দিকুর রহমান, জয়নাল, মীর মোহাম্মদ স্বপন ও মো. আ. ইসলাম।
মামুন চৌধুরী ও ওয়াসিম খানকে রায় ঘোষণার সময় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে তাদের আবার কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়। অন্যরা আদালতে অনুপস্থিত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী আনোয়ার হোসেন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও বিএনপি জামায়াতের অন্য নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিএনপি জামায়াতের নেতা–কর্মীরা ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর রাত আটটার দিকে শাহজাদপুর বাঁশতলা ক্যামব্রিয়ান স্কুলের বিপরীত পাশে রাস্তায় বেআইনি সমাবেশ করে রাস্তায় যানবাহন চলাচলে বাধার সৃষ্টি করে ও গাড়ি ভাঙচুর করে।
এ ঘটনায় গুলশান থানার এসআই আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে গুলশান থানায় ৩৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
গুলশান থানার এসআই ফারুক হোসেন তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৫ এপ্রিল ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলা চলাকালে ১০ জন সাক্ষীর মধ্যে চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে দুপুরের আগে একই আদালত তেজগাঁও থানার এক মামলায় ১৮ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে আড়াই বছর করে কারাদণ্ড দেন।
নাশকতার এক মামলায় যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার ওরফে আনোয়ার কমিশনারসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সাজাপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি জালাল আহমেদ, ওয়ার্ড নেতা এল রহমান, গান্ডু শাহিন, মোহাম্মদ ইয়াসিন, ঝন্টু, বিল্লাল, তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির হোসেন, ছাত্রদল নেতা সাজ্জাদ ইরফান, বাবু, কাটা সোহেল, শিমুল, শামীম, মনি, নাটা বিল্লাল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জহির।
রায় ঘোষণার সময় আনোয়ার কমিশনারকে আদালতে হাজির করা হয়। রায়ের পর সাজা পরোয়ানাসহ তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। অন্য আসামিরা পলাতক ছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী কাজল রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৬ মার্চ রাত ৮টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনের সামনে বেআইনি সমাবেশ করে একটি ট্যাক্সিক্যাব থামিয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা আগুন ধরিয়ে দেযন। আগুনে গাড়িটি পুড়ে যায় এবং তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়।
এ ঘটনায় ট্যাক্সি ক্যাবের চালক মো. বাবুল ওই দিন রাতে তেজগাঁও থানায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ১৮ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি ১৮ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এই মামলায় ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।