ভোক্তা-অধিকার সচেতনতা বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দলকে সংবর্ধনা প্রদান

Date: 2023-12-11
news-banner
প্রেস বিজ্ঞপ্তি: ভোক্তা-অধিকার সচেতনতা বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দলকে সংবর্ধনা প্রদান

আজ ১১ ডিসেম্বর, ২০২৩, সোমবার সকাল ১১:০০ টায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে (০১, কারওয়ান বাজার, টিসিবি ভবন, ৮ম তলা, ঢাকা ) ভোক্তা-অধিকার সচেতনতা বিষয়ক বিতর্ক প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দলকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। 

সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জনাব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি'র চেয়ারম্যান জনাব হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

উল্লেখ্য, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ও রানার আপ হয় ইডেন মহিলা কলেজ।

সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষনাগার) জনাব ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেনসহ প্রধান কার্যালয়ের, ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

সংবর্ধনার শুরুতে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের বিতার্কিকদের হাতে প্রাইজমানি (দুই লক্ষ টাকা) এবং চ্যাম্পিয়নস ট্রফি তুলে দেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) জনাব এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি'র চেয়ারম্যান জনাব হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। অতঃপর বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ৫ জন বিতার্কিকদের প্রত্যেককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। 

পরবর্তীতে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় রানার আপ ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিকদের হাতে প্রাইজমানি (এক লক্ষ টাকা) এবং রানার আপ ট্রফি তুলে দেওয়া হয়। অতঃপর বিতর্ক প্রতিযোগিতায় রানার আপ ইডেন মহিলা কলেজের ৫ জন বিতার্কিকদের প্রত্যেককে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। 

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় রানার আপ ইডেন মহিলা কলেজের দলনেতা জনাব হাজেরা সুলতানা তাঁর অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বলেন, সরকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি আয়োজনের জন্য জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পাশাপাশি ডিবেট ফর ডেমোক্রেসিকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভোক্তা-অধিকার বিষয়ে অনেক কিছুই জানতে পেরেছি এবং নিজে সচেতন হয়েছি।

বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের দলনেতা জনাব সোহাগ হোসেন তাঁর অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে অধিদপ্তর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসিকে সময়োপযুগী বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন এই আয়োজনের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার সম্পর্কে আমাদের জানার জায়গা আরও বিস্তৃত হয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আমরা আনন্দিত ও গর্বিত।

ইডেন মহিলা কলেজের মডারেটর জনাব সাবরুন আহমেদ বলেন, ১৬ বছর আগে ইডেন মহিলা কলেজে বিতর্ক প্রতিযোগিতার যাত্রা শুরু হয়। বিতর্ক প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে আমরা ভোক্তা-অধিকার সম্পর্কে সম্যক ধারণা পেয়েছি। জনসচেতনতামূলক এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসিকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের মডারেটর জনাব মো: রাফিউল ইসলাম বলেন, দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণসহ ভোক্তা অধিকার রক্ষায় অধিদপ্তর নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে উপভোগ্য একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করায় জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তার পাশাপাশি ডিবেট ফর ডেমোক্রেসিকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

অধিদপ্তরের পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষনাগার) জনাব ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন বলেন, বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি খুব প্রাঞ্জল ছিল। তিনি বলেন, অধিদপ্তরের মূল কাজের একটি হল জনসচেতনতা সৃষ্টি করা এবং এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে আমরা উদীয়মান শিক্ষিত জনগোষ্ঠিকে ভোক্তা অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে আমাদের লক্ষ্য পূরণে সফল হয়েছি।

অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনের মাধ্যমে আমরা একটি জাগরণ সৃষ্টি করতে পেরেছি। এই অল্পবয়স্ক শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন করায় ভোক্তা-অধিকার সম্পর্কে জ্ঞান ছোট থেকেই তাদের মনে প্রোথিত থাকবে এবং এটা পরবর্তীতেও টিকে থাকবে। এছাড়াও তিনি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দুই দলকেই অভিন্দন জানান।

সভাপতির বক্তব্যে ডেমোক্রেসি'র চেয়ারম্যান জনাব হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনে সার্বিক তত্ত্বাবধানের জন্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও তিনি অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সকলকে এবং বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ও রানার আপ দল ইডেন মহিলা কলেজের বিতার্কিক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নিরলস ও ধারাবাহিক কার্যক্রমের জন্য একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। অনিয়ম ও দুনীর্তিমুক্ত জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদানের সুপারিশ করছি। একই সাথে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের যেসব কর্মকর্তারা ২৪ ঘন্টা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে নানা অভিযান পরিচালনা করছেন তাদের জন্য ঝুঁকিভাতা সহ বিশেষ ইনসেন্টিভ প্রদানের সুপারিশ করছি। 

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতার জন্য ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এছাড়াও তিনি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দুই দলের বিতার্কিক, মডারেটর, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরসহ বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের সকলকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার রক্ষায় অধিদপ্তর চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজন ভোক্তাদের সচেতনতা। ভোক্তারা যতদিন পর্যন্ত তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন না হবে ততদিন পর্যন্ত ভোক্তা অধিকার রক্ষা করা সম্ভব হবে না। 

তিনি আরও বলেন, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অধিদপ্তরের কাজের মূল্যায়ন এবং ক্ষেত্র বিশেষে সমালোচনা করা হয়। আমরা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সমালোচনাকে স্বাগত জানাই কারণ সমালোচনা কাজের দুর্বল দিকগুলো দেখিয়ে দেয় এবং এই দুর্বল দিকগুলো নিরসনের মাধ্যমে অধিদপ্তরকে শক্তিশালী করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়।  

তিনি বলেন, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযানের পাশাপাশি ভোক্তা সাধারণকে তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে যে সকল কার্যক্রম গ্রহণ করেছে তার মধ্যে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন অন্যতম। 

তিনি আরও বলেন, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অধিকতর প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা, সেমিনার, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, রচনা প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন প্রশিক্ষন ইন্সটিটিউটের প্রশিক্ষণ মডিউলে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ অন্তর্ভূক্তকরণ, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের হটলাইন সেবা (নম্বর: ১৬১২১) চালুকরণ, বিভিন্ন সুপার শপের ভিতরে স্থাপিত টিভি স্ক্রিনে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এবং অধিদপ্তরের কার্যক্রম ভিত্তিক বিভিন্ন সচেতনতামূলক ভিডিও কন্টেন্ট প্রচার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং অধিদপ্তরের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (MOU) স্বাক্ষর, গণশুনানি, অধিদপ্তরের নিজস্ব ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে প্রচারণাসহ বিভিন্ন ধরনের গণসচেতনতামূলক ও মটিভেশনাল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। 

তিনি বলেন, এই বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি মূল্যায়ন করে আমার মনে হয়েছে প্রতিযোগিতাটি অব্যাহত রাখা দরকার। তিনি ভোক্তা-সাধারণকে সচেতন করার লক্ষ্যে ভিন্ন আঙ্গিকে বিতর্ক প্রতিযোগিতা আয়োজন করার কথা বলেন।

মহাপরিচালক প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দকে অধিদপ্তরের সার্বিক কার্যক্রম প্রচারে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান। এক্ষেত্রে তিনি বলেন, মিডিয়ার কল্যাণে আমরা সহজে ভোক্তাদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি।   

তিনি প্রচার-প্রচারণার ক্ষেত্রে অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত এ বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ অন্যান্য জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে সচেতন হবে ভোক্তা এবং সুরক্ষিত হবে ভোক্তার অধিকার এ আশাবাদ ব্যক্ত করে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।
image

Leave Your Comments