দুষ্টের দমন শিষ্টের লালন, এটাই পুলিশের ধর্ম: প্রধানমন্ত্রী

Date: 2024-02-27
news-banner
পুলিশের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনারা দেশের মানুষের সেবা করেন। দুষ্টের দমন শিষ্টের লালন, এটাই পুলিশের ধর্ম। আপনারা সেবার মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জন করবেন, এটাই আমাদের কাম্য। 

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

এর আগে, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মাঠে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৪ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী।

সেখানে তিনি পুলিশ বাহিনীর ৪০০ কর্মকর্তা ও সদস্যকে পদক এবং সম্মানসূচক ব্যাজ পরিয়ে দিয়েছেন। অবদানের জন্য তাদের এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারো কাছে ভিক্ষা চেয়ে নয়, কারো কাছে হাত পেতে নয়, মাথা উঁচু করে বাঁচবে বাংলাদেশ। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এর বিরুদ্ধে পুলিশকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় পুলিশ সদস্যরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখবে, এটাই আমাদের কাম্য। পুলিশ এখন সবচেয়ে যুযোপযোগী, আধুনিক ও স্মার্ট।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ যখনই কোনো বিপদে পড়ে সবার আগে আশ্রয় খোঁজে পুলিশের কাছে। পুলিশ জনগণের বন্ধু, এটা সব সময় হয়ে আসছে। এটা প্রতিষ্ঠিত হওয়া একান্ত দরকার। পুলিশ বাহিনীকে মানুষের সেবায় আমরা গড়ে তুলছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগে পুলিশ বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। করোনায় যখন আত্মীয়-স্বজন পাশে ছিল না, পুলিশ ছিল মানুষের পাশে। মৃত লাশ দাফন কাফনের ব্যবস্থাও করেছে।

সরকারপ্রধান বলেন, রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগে বাধা দিতে যাওয়ায় পুলিশের উপরও হামলা হয়েছে। তাদের পিটিয়ে মারা হয়েছে। জনগণের জানমাল রক্ষায় পুলিশ জীবন দিয়েছে। জনগণের জানমাল রক্ষা করেছে। ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর রাজারবাগে ঢুকে ওই জামায়াত-বিএনপি হামলা করেছে। পুলিশ ধৈর্যের সঙ্গে এগুলো মোকাবিলা করেছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে গিয়েও আমাদের পুলিশ বাহিনী বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। অনেকে জীবনও দিয়েছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বেও শান্তিরক্ষায় তাদের অবদানের জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই।

২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর হতে ২০২৪ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ৩৫ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ৬০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)’ এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ৯৫ জন পুলিশ সদস্যকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)-সেবা’ এবং ২১০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)-সেবা’ পদকে ভূষিত করা হয়।

পুলিশ সপ্তাহ-২০২৪ এর বার্ষিক পুলিশ প্যারেডে প্যারেড কমান্ডার হিসেবে নেতৃত্ব দেবেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিসি মো. সোহেল রানা। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন কন্টিনজেন্টের পুলিশ সদস্যরা প্যারেডে অংশ নেবেন।

ছয় দিনব্যাপী এবারের পুলিশ সপ্তাহের মূল প্রতিপাদ্য ‘স্মার্ট পুলিশ স্মার্ট দেশ, শান্তি প্রগতির বাংলাদেশ’। উল্লেখযোগ্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ঊর্ধ্বতন পুলিশ অফিসারদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতির ভাষণ, প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রধান বিচারপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং আইজিপির সম্মেলন, আইজি’জ ব্যাজ, শিল্ড প্যারেড, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার পুরস্কার বিতরণ ইত্যাদি।

পুলিশ সপ্তাহের বিভিন্ন কর্ম অধিবেশনে বিগত এক বছরের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে পরবর্তী বছরের কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হবে। আগামী ৩ মার্চ শেষ হবে পুলিশ সপ্তাহ।
image

Leave Your Comments