যে কোনো মূল্যে নাবিকদের ফিরিয়ে আনা হবে: নৌ প্রতিমন্ত্রী

Date: 2024-03-13
news-banner
যে কোনো মূল্যে নাবিকদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বলেন, বাংলাদেশি জাহাজটি এখনও জলদস্যুদের নিয়ন্ত্রণে। তবে ২৩ জন নাবিক নিরাপদে আছেন। তাদের দ্রুত সুস্থতার সঙ্গে ফিরিয়ে আনতে পররাষ্ট্র পর্যায়ে আলোচনা চলছে। বুধবার (১৩ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়েছে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। চট্টগ্রামের কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানাধীন জাহাজটি মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বেলা একটায় জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর জানতে পারে গ্রুপটি। জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে। 

কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম জানান, ‘গোল্ডেন হক’ নামের জাহাজটি বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের বহরে যুক্ত হওয়ার পরে এর নাম হয় ‘এম ভি আবদুল্লাহ’। ঘটনাটি জানার পর তারা জাহাজের নাবিকদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। 

এই জাহাজটি গত বছর সংগ্রহ করে কেএসআরএম গ্রুপ। ২০১৬ সালে তৈরি জাহাজটি লম্বায় ১৯০ মিটার। কেএসআরএম গ্রুপের বহরে যুক্ত হওয়ার পর সাধারণ পণ্য পরিবহন করে আসছিল জাহাজটি।

ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ার পর জাহাজটি বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে জাহাজটি ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়া নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে দস্যুরা। বর্তমানে নাবিকদের ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

মঙ্গলবার বিকাল ৫টা ৩২ মিনিটে পাঠানো ভয়েস মেসেজে জাহাজে থাকা একজন তার এক স্বজনকে বলছিলেন, ‘আমাদের জন্য দোয়া করিও। সোমালিয়ার জলদস্যুরা অ্যাটাক করেছে। অলরেডি আমরা অ্যারেস্টেড। আমাদের এক জায়গায় বন্দি করে রাখছে। ওরা বোট উঠিয়ে ফেলেছে অলরেডি।

ওই নাবিককে আরও বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের জাহাজ সোমালিয়া নিয়ে যাচ্ছে। সোমালিয়া নিয়ে যাওয়া মানে আমাদের জন্য খুব খারাপ অবস্থা। এটা গোপন রাখিও। আমার পরিবারের একটু খোঁজখবর নিয়ো, ছেলেগুলোর খেয়াল রাখিও। মুরুব্বিদের দোয়া করতে বলিও।’ ‘আল্লাহ যদি হায়াতে নিয়ে আসে, বাঁচায় নিয়ে আসে তাহলে দেখা হবে কোনো দিন।’

জাহাজটির চিফ অফিসার মো. আতিক উল্লাহ খানের স্বজনরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে স্ত্রীর কাছে একটি অডিও বার্তায় আতিক উল্লাহ জানান, জলদস্যুরা তাদের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে নিচ্ছে। টাকা না পেলে একজন একজন করে প্রাণনাশের হুমকিও দেয়া হচ্ছে তাদের। এদিকে, এমভি আবদুল্লাহকে সোমালিয়া উপকূলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাহাজটিতে থাকা আরেক বাংলাদেশি।

এদিকে উদ্বেগে দিন কাটছে জাহাজটিতে থাকা কর্মকর্তা ও নাবিক স্বজনদের। 

জাহাজে থাকা একাধিক সূত্র জানিয়েছে, জাহাজে আনুমানিক ৫০ জন সশস্ত্র জলদস্যু অবস্থান করছে। তারা সবার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে গেছে।

এর আগে, ২০১১ সালে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয়েছিল ২৬  ক্রুসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি জাহান মনি। ৩ মাস পর মুক্ত হয়ে জাহাজটি সোমালিয়া থেকে ওমানের সালালা বন্দরে ফেরে।
image

Leave Your Comments