‘একটি আদর্শ খাবার সময়সূচি’ যা পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে প্রত্যাহিক জীবনে

Date: 2023-10-18
news-banner
মো: ওমর ফারুক শাওন । প্রতিবেদক- JARNEWS.NET

অধিকাংশ মানুষ জানেন না খাওয়াদাওয়ার নির্দিষ্ট সময়সূচি যখন মন চায় খেতে অভ্যাস্ত আমরা। একেক দিন ভিন্ন ভিন্ন একেক সময়ে খেতে ব্যাস্ত আবার কোন সময় কয়েক বেলা বাদও পড়ে যায়। এ ধরনের খাদ্যাভ্যাসের নানা সমস্যা তৈরি হয়ে তাকে আর তাই সাম্প্রতিক কালে বিজ্ঞানীরা বলেন, কেবল ‘কী’ খেলাম সেটাই সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং ‘কখন’ খেলাম—সেটাও সমান গুরুত্ব বহন করে।

শরীরের হজম প্রক্রিয়া, বিপাকক্রিয়া, রুচি, খিদে নিয়ন্ত্রণের কাজে নানা রকমের হরমোন ও রাসায়নিক উপাদান কাজ করে থাকে। এসব রাসায়নিক নিঃসরণের একটি ছন্দ আছে, যা দিন-রাতের সময়সূচি দ্বারা গঠিত। একই নিয়ম মেনে চলে পরিপাকতন্ত্রের নানা অম্ল বা অ্যাসিড, রাসায়নিক উপাদান এবং এনজাইম বা উৎসেচকগুলোও। বিশৃঙ্খল খাদ্যাভ্যাস এই সুসংহত সুশৃঙ্খল ছন্দকে ব্যাহত করে। 

গবেষণায় উঠে আসে যে বিশৃঙ্খল খাদ্যাভ্যাস ওজন বৃদ্ধি, টাইপ-টু ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়। মেটাবলিক সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। আবার সময়মতো না খেলেও নির্দিষ্ট সময়ে কিন্তু ঠিকই পাচক রস, অম্ল ইত্যাদি নিঃসৃত হয়ে যায়। ফলে বদহজম হয়, অ্যাসিডিটি হয়। ঠিকঠাক পরিপাক না হলে ভিটামিন-খনিজের অভাব দেখা দিতে পারে।

সুতারাং
কেমন হতে পারে একটি আদর্শ খাবার সময়সূচি ?
এই বিষয়ে বিজ্ঞানীরা বলেন, খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই নির্ভর করে ব্যক্তিগত অভ্যাস, সামাজিক আচার-আচরণ ও সংস্কৃতির ওপর। তারপরও সবার উচিত নির্দিষ্ট  কিছু নিয়ম মেনে চলা, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো :

*  সকালের নাশতা যা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কারণ সকালের শুরুতেই আমাদের বিপাকক্রিয়া শুরু হয় এবং হরমোনের মাত্রাও এ সময় বেশি থাকে। সকালের নাশতার আদর্শ সময় শুরু হয় ৭টা থেকে। ভালো হয় যদি নয়টার মধ্যে সেরে ফেলা যায়।

* দুপুরে খাওয়ার সঠিক সময়  ১২:৩০ মিনিট থেকে ১টা। সকাল ও দুপুরের খাবারের মধ্যে একটা হালকা নাশতা নিতে পারেন। সকালের নাশতা মোটামুটি পেট ভরে খেলে দুপুরের খাবারটা মাঝারি পরিমাণের হওয়া উচিত।

* সবচেয়ে ভালো হয় যদি রাতের খাবার সাতটার মধ্যে সেরে ফেলা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, রাতের খাবার দেরিতে খাওয়ার সঙ্গে শরীরের ওজন বৃদ্ধির সম্পর্ক আছে। কোনো কারণে এই সময়ের মধ্যে সম্ভব না হলে অন্তত ঘুমানোর ঘণ্টা তিনেক আগে রাতের খাবার সেরে ফেলুন। এ সময় হালকা খাবারই ভালো।

* শারীরিক ব্যায়াম করার অন্তত ৪৫ মিনিট পর খাবার খাওয়া উচিত।

* প্রতিদিন একই সময়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। একেক দিন একেক সময়ে খেলে শরীরের রাসায়নিক ছন্দ ব্যাহত হয়।

ডা. তানজিনা হোসেন
image

Leave Your Comments