ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ,দাম বাড়তে পারে জ্বালানি তেলের

Date: 2023-10-21
news-banner
ইফতেখার উদ্দিন : আইইএ-র সতর্কবার্তা, সে ক্ষেত্রে সেই সব উন্নয়নশীল দেশই সব থেকে বেশি ভুগবে, যারা তেল এবং অন্যান্য জ্বালানি আমদানি করে চাহিদা মেটায়।

তারা বলছে— রাশিয়া এবং সৌদি আরব জ্বালানির উৎপাদন কমিয়েছে। তার উপর অবস্থা জটিল করেছে পশ্চিম এশিয়ায় সংঘাত। এতে তেলের জোগান ব্যাহত হতে পারে, বাড়তে পারে দাম। 

আইইএ বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কাজ করে। এর মধ্যে অন্যতম নীতির সুপারিশ, তথ্য-পরিসংখ্যান প্রকাশ এবং বিশ্লেষণ।

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর আগের দিন, এ মাসের ৬ তারিখ বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের (ব্রেন্ট ক্রড) দাম ব্যারেলে ছিল ৮৫ ডলার। পশ্চিম এশিয়া উত্তপ্ত হতেই তা ৯৬ ডলারে চলে যায়। পরে ৯০-এর নীচে নামলেও শুক্রবার আবার ৯৩ ডলার পেরিয়েছে।

আইইএ-র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ফেইথ বাইরলের মতে, বাজার অস্থির থাকবে। সংঘাত তেলের দর বাড়াতে পারে। যা মূল্যবৃদ্ধির জন্য খারাপ। বিশেষত উন্নয়নশীল দেশের পক্ষে। তার ওপর সৌদি আরব ও রাশিয়া তেল উৎপাদন ছাঁটাই করেছে। চীনে চাহিদা বৃদ্ধির আশা। ফলে জোগানে টানাটানি চলতে পারে।

বিশ্লেষক টনি সাইকামোর রয়টার্সকে বলেন, বড় উদ্বেগের বিষয় হল যে এই সপ্তাহান্তে গাজায় আইডিএফ (ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী) প্রবেশের বিষয়ে আমরা উত্তেজনা বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছি। এর অর্থ হলো অপরিশোধিত তেলের দাম আরও বাড়তে পারে।


হামাস গত ৭ অক্টোবর আকস্মিকভাবে ইসরায়েলে হামলা চালায়। এর জেরে ইসরায়েল গাজাজুড়ে পাল্টা হামলা শুরু করে।ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ চলছেই অবরুদ্ধ গাজায় । জাতিসংঘ জানায়, গাজায় গত দেড় সপ্তাহের বেশি সময়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭৮৫। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ১ হাজার ৫২৪ শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন সাড়ে ১২ হাজারের বেশি মানুষ।


মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ইসরায়েলের সংঘাতের জেরে দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে বেড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। শুক্রবার প্রথম কয়েক ঘণ্টায় পর্যন্ত বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড ফিউচার তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৫ সেন্ট বেড়ে ৯৩ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড প্রতি ব্যারেল ৯০ ডলার ৭১ সেন্ট হয়েছে। খবর রয়টার্সের।


হামাস ও ইসরায়েলের দ্বন্দ্ব মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং তাতে বিশ্বের শীর্ষ-উৎপাদনকারী অঞ্চলগুলোর মধ্যে সরবরাহ সংকট হতে পারে—এমন আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা বিচলিত হয়ে পড়েছেন। বাজারে তার প্রভাব পড়েছে এবং জ্বালানি তেলের দাম বাড়ছে।


নিসান সিকিউরিটিজের শাখা এনএস ট্রেডিংয়ের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ইসরায়েল যখন গাজার উত্তরাঞ্চলের বাসিন্দাদের দক্ষিণে চলে যাওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়, তখন বিনিয়োগকারীরা এই সংঘাতের প্রভাব মূল্যায়নের চেষ্টা করেছে। তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর ওপর এই যুদ্ধের প্রভাব পড়লে তেলের দাম বাড়তে পারত। সত্যিকারের স্থলযুদ্ধ শুরু হলে তেল সরবরাহে প্রভাব পড়বে। সে ক্ষেত্রে, তেলের দাম সহজেই ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

বৈশ্বিক তেল ও গ্যাস সরবরাহে মধ্যপ্রাচ্যের এই বিরোধের কারণে খুব একটা প্রভাব ফেলার কথা নয়। কারণ, এই দুটি সম্পদের বড় কোনো উৎপাদক নয় ইসরায়েল। কিন্তু গত বছর শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর মধ্যপ্রাচ্যে হামাস ও ইসরায়েলের সংঘর্ষে তেলের বাজারে দেখা দেয় গুরুতর ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি। কারণ, এই যুদ্ধে ইরানের জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাকেও একটি বড় বিষয় হিসেবে দেখা হয়।


image

Leave Your Comments