ভৈরবে রেল দুর্ঘটনায় নিহত অন্তত ১৭

Date: 2023-10-24
news-banner
২০১৯ সালের পর সবচেয়ে বড়ো রেল দুর্ঘটনা দেখল বাংলাদেশ। সোমবার ঢাকা থেকে ৮৫ কিলোমিটার দূরে দেশের অন্যতম ব্যস্ত রেলওয়ে স্টেশন কিশোরগঞ্জের ভৈরব স্টেশনের কাছে মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় যাত্রীবাহী রেলের দু’টি বগি লাইনচ্যুত হয়।

এই দুর্ঘটনায় অন্তত ১৭ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও ৫০ জনের বেশি।

দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের যাত্রী ডা. ইয়াশফিকুল হক মুনিম কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের দুর্ঘটনার বর্ণনা দেন।

মুনিম জানান, ভৈরব স্টেশনে তাঁর ট্রেনটি ইঞ্জিন পরিবর্তন করে বিকেল ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে ছাড়ার পর একটু দূর এগুতেই মালবাহী ট্রেনটি তাঁর ট্রেনের পেছনের বগিতে আঘাত করে।

“১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড সময় পেলে যাত্রীবাহী ট্রেনটি পার হয়ে যেতে পারত,” মন্তব্য করে কিশোরগঞ্জের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের এই চিকিৎসক বলেন, “স্টেশনের সিগন্যালের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এটা ঘটেছে।”

ট্রেনটির সামনের দিকের বগিতে থাকায় তিনি আহত হননি জানিয়ে মুনিম বলেন, “এর পর অন্য ব্যবস্থায় আমার ঢাকায় রওয়ানা দিয়েছি।”

ভৈরবের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ সাংবাদিকদের বলেন, “ঢাকাগামী যাত্রীবাহী এগারসিন্দুর এক্সপ্রেসে মালবাহী রেল ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।”

দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনের যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভৈরব থেকে যাত্রীবাহী ট্রেনটি ঢাকার দিকে ছেড়ে আসার পরপরই মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় এর দু’টি বগি উল্টে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার পর ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও নোয়াখালীর রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। উদ্ধারকাজে যুক্ত রয়েছে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক দল।

উদ্ধার কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার আবুজর গিফারি  জানান, “১৭ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৫০ এর উপরে।”

সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত নিহতদের মরদেহ দুর্ঘটনাস্থলেই ছিল বলে জানান তিনি। এ ঘটনায় “অসতর্কতা” ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কে দায়ী তা এখনো বলার সময় আসেনি।”

এই ঘটনায় দু’টি আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে বেনারকে জানিয়েছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জ্যৈষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা সিরাজ উদ-দৌলা খান।

এর আগে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে তূর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছিলেন।
image

Leave Your Comments