ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতে কক্সবাজারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় ঝড়ো বাতাসে গাছপালাসহ নানা স্থাপনা ভেঙে গেছে। বিদ্যুতের খুটি ভেঙে যাওয়ায় কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন উপজেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মহেশখালীর বিভিন্ন ইউনিয়ন।
এই ঘূর্ণিঝড়ে কক্সবাজারে অন্তত তিন জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে কক্সবাজার শহরের পাহাড়তলীতে দেয়াল চাপায় মোহাম্মদ আব্দুল খালেক (৪০) নামের এক মাছ ব্যবসায়ী মারা গেছেন। গাছ চাপা পড়ে চকরিয়ার বদরখালী ইউনিয়নে আসকর আলী (৫০) নামে আরেক ব্যক্তির প্রাণহানি ঘটেছে। আর মহেশখালীতেও গাছ চাপায় একজন মারা যান। তার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। এই উপজেলায় হতাহতের সংখ্যা ১০ জনের অধিক বলে জানা গেছে।
এদিকে, একাধিক জায়গায় গাছ ভেঙে পড়ায় কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করতে এসব গাছ সরানোর চেষ্টা চলছে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, শক্তি হারিয়ে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় হামুনের অগ্রভাগ আঘাত হানে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলে। কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে অতিক্রম করা শুরু করে এই ঘূর্ণিঝড়। এটি শেষ রাত নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল দিয়ে অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে। এর প্রভাবে বইছে তীব্র ঝড়ো বাতাস, আর বৃষ্টি হচ্ছে।
এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কক্সবাজারে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। হামুন মোকাবেলায় কক্সবাজারে ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়। সন্ধ্যা থেকে জেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন আসতে শুরু করেন।
ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে গত সোমবার রাত থেকে কক্সবাজার ও উপকূল এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া আজ বুধবারও কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলসহ সারাদেশে ভারী বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস। কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে পড়েছে।
পাশাপাশি ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালীসহ অন্য উপকূলীয় জেলাগুলোতেও জারি আছে সতর্কতা। নিরাপদ আশ্রয়ে গেছে সেখানকার বাসিন্দারা। বন্ধ আছে নৌযান চলাচল।