কাগজসংকটে প্রতিদিন কম ছাপতে হচ্ছে ২০ লাখ কপি পাঠ্যবই

Date: 2025-01-09
news-banner
কারণ কাগজের ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন প্রেস মালিকরা। তারা কাগজসংকটে কার্যাদেশ পেয়েও বই ছাপাতে পারছেন না। জানা গেছে, ১১৬টি ছাপাখানা দিনে ৪০ লাখ কপি পাঠ্যবই ছাপাতে পারে। তবে কাগজসংকটের কারণে তারা দিনে ২০ লাখের বেশি ছাপাতে পারছে না।

এদিকে কাগজসংকটের বড় কারণ হলো পাঠ্যবই না ছাপিয়ে অবৈধ নোট-গাইড বই ছাপানো। এক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা করছেন না একশ্রেণির প্রেস মালিক। তারা অধিক মূল্যে কাগজ ক্রয় করে বাজারে সংকট সৃষ্টি করেছেন। পাঠ্যবই ছাপানোর চেয়ে গাইড বই ছাপিয়ে ২০ গুণ বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। এ কারণে দেদার ছাপিয়ে চলেছেন নোট-গাইড বই। সরকারের কাছে এমন তথ্য আসার পর ডিসিদের ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি ঢাকা জেলা প্রশাসককে পাঠানো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির নতুন পাঠ্যবই ছাপা পুরো জানুয়ারি মাস জুড়ে চলবে। এ সময়ে ৪০ কোটি পাঠ্যবই ছাপার কাজে নিযুক্ত প্রেসসমূহে যেন নোট ও গাইড বই, ডায়ারি, ক্যালেন্ডার ইত্যাদি ছাপতে না পারে তা নিশ্চিত করতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য বলা হলো। চিঠিতে ঢাকা জেলা প্রশাসককে ১১৬টি প্রেসের ঠিকানাও দেওয়া হয়েছে। আরো কয়েক জন জেলা প্রশাসককে একই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

গাইড বই ছাপিয়ে কারখানায় মজুত রাখা হয়েছে: অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১৫ বছর ধরে অবৈধ গাইড বইয়ের রমরমা বাণিজ্য করে আসছে লেকচার, পাঞ্জেরী, অ্যাডভান্সড, পপিসহ ৫০টি পাবলিকেশন্স। এদের অধিকাংশই আবার পাঠ্যবই ছাপানোর কাজও পেয়েছে। কিন্তু তারা পাঠ্যবইকে গুরুত্ব না দিয়ে গাইড বই ছাপানোর কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে। ছাপানো গাইড বইগুলো তারা কারখানায় মজুত করে রেখেছে।

গত ১ জানুয়ারি ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্শন উদ্বোধন ও মোড়ক উন্মোচন’ অনুষ্ঠানে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে সকল শ্রেণির বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে। তবে কাগজ সংকটের কারণে এ সময়ে সব বই পৌঁছানোর সম্ভব হচ্ছে না।

সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে যে-সব প্রেস নোট-গাইড ছাপার কাজ করছে তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে এবার কঠোর অবস্থানে গেছে সরকার। জানা গেছে, গতকাল সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অভিযান পরিচালনা করে দুটি প্রেস থেকে অবৈধ নোট গাইড ধ্বংস করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে লেটার এন্ড কালার প্রিন্ট এবং অনুপম প্রিন্ট নামের দুটি প্রিন্টিং প্রতিষ্ঠান। যারা ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে এনসিটিবির বই ছাপানোর কাজ করছেন।
image

Leave Your Comments