ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন জানিয়েছেন তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন প্রস্তুত। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যত দ্রুত সিদ্ধান্তটি হবে ততই মঙ্গল। চীনের কুনমিং প্রদেশের সেরা তিনটি হাসপাতালকে বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসাসেবার জন্য বেছে নেয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, চিকিৎসার ধরন, ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, দোভাষী নির্বাচনসহ সামগ্রিক প্রস্তুতিতে দুই দেশের সংশ্লিষ্টরা কাজ করছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে মার্চের শুরুতেই বাংলাদেশের রোগীদের প্রথম দলটি চিকিৎসা নিতে কুনমিং যাবে বলে আশা করছে বেইজিং। মঙ্গলবার বিকালে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। গত মাসে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বেইজিং সফর করেন। তখন তিনি প্রথম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন। ভারতের বিকল্প হিসাবে বাংলাদেশিদের চিকিৎসার ওই প্রস্তাব তৎক্ষণাৎ লুফে নেয় চীন।
বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যকার সম্পর্ক বিষয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে রাষ্ট্রদূত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এ সময় দূতাবাসের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দুই দেশের ভবিষ্যত সহযোগিতা বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, গত ৫০ বছর ধরে অভিন্ন স্বার্থে একে অপরকে সহযোগিতা করে আসছে। চীন সবসময় বাংলাদেশকে গুরুত্ব দেয়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি যাই থাকুক না কেন, পরস্পরিক সম্মান, সাম্য এবং স্বার্থকে সামনে রেখে এ দেশের সকলের সঙ্গে বন্ধুত্বই চীনের নীতি।
৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে হাসিনার স্বৈরশাসনের পতনের পর থেকে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে নতুন মেরুকরণ ঘটেছে। এটি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা? জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন কৌশলী জবাব দেন। বলেন, প্রশ্নটি চীনকে নয়, ভারতের দূতের কাছে রাখতে হবে। তবে আশা করেন যেকোনো ইস্যু দ্বিপক্ষীয় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। ঢাকা-দিল্লির উত্তেজনা কমাতে চীন মধ্যস্থতা করবে কিনা? এমন প্রশ্নে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি মনে করি বাংলাদেশিরা নিজেদের সমস্যা সমাধানে যথেষ্ট বিচক্ষণ। রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, তিস্তা আপনাদের এলাকার নদী, আপনাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে এ প্রকল্প দ্রুত শুরু করলে বাংলাদেশ উপকৃত হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে ইয়াও ওয়েন জানান, সংস্কার ও নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। এ নিয়ে মন্তব্য করবে না চীন।