রাজধানীতে বেতন ভাতা বৃদ্ধি ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজও সড়কে নেমে বিক্ষোভ করছেন পোশাক শ্রমিকরা। এ নিয়ে চতুর্থ দিনের মতো আন্দোলন করছেন তারা। আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ঘটেছে। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) বেলা ১২টার দিকে পূরবী সিনেমা হলের সামনে তাদের মধ্যে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এদিন সকাল ৮টা থেকে রাজধানীর মিরপুরের পূরবী সিনেমা হলের সামনের প্রধান সড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা।
প্রথমে আন্দোলনরত শ্রমিকরা একটি মিছিল নিয়ে মিরপুর ১২ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের দিকে যান। পরবর্তীতে মিরপুর ১১ নম্বর পূরবী সিনেমা হলের সামনে এসে সড়কে অবস্থান নেন। আরেকটি মিছিল সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের দিকে যায়।
পোশাক শ্রমিকরা জানান, গত মঙ্গলবার সকালে ঘটনার সূত্রপাত হয় পল্লবীতে ইপিলিয়ন নিটওয়্যারস লিমিটেডের একটি কারখানার কর্মীদের আটকে রাখাকে কেন্দ্র করে। অন্য কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলনে ইপিলিয়নের কর্মীরা যুক্ত হতে পারেন, এমন আশঙ্কা থেকে তাদের বের হতে দেয়া হচ্ছিল না।
কারখানাটির আশপাশের এলাকায় লাঠিসোঁটা নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের অনুসারীরা শ্রমিকদের ভয় দেখাচ্ছিলেন। এ নিয়ে ইপিলিয়নের কর্মীদের সঙ্গে তাদের প্রথমে বাগবিতণ্ডা হয়। এর জেরে পোশাককর্মীদের ওপর তারা হামলা করেন।
এদিকে পোশাক কারখানায় নিরাপত্তায় ঢাকা এবং আশপাশের এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকালে বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মো. শরিফুল ইসলাম জানান, ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের এলাকায় গার্মেন্টসের নিরাপত্তা জোরদারে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আশুলিয়া, সাভার, মিরপুর, রামপুরা, আব্দুল্লাহপুর, টঙ্গি ও গাজীপুর-কোনাবাড়ী এলাকার গার্মেন্টসগুলোর নিরাপত্তা জোরদারে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গার্মেন্টস শ্রমিকরা গত এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন করছে। রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
আন্দোলনের নামে দেশে তৈরি পোশাক খাতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে বুধবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। গতকাল বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে শিল্প মালিকদের বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির দাবির সঙ্গে মালিকরাও একমত পোষণ করেছেন।
বুধবার দুপুরে মজুরি বোর্ডের সভা শেষে জানানো হয়, শ্রমিকদের দেয়া প্রস্তাবনা- ১০ হাজার ৪০০ টাকার বেশি বেতন পাবেন তারা। যা কার্যকর হবে আগামী মাস থেকে।