সোমবার (১৩ নভেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে দেশের বর্তমান বাজার
পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
বাণিজ্যসচিব বলেন, এসব বিষয়ে তদন্তু হচ্ছে। আপনারা জানেন ভোগ্যপণ্য
যেমন, তেল, চিনি, ডাল, পেঁয়াজ, মাংস, ডিমসহ এসব পণ্যে যে বড় বড় কোম্পানিগুলো
রয়েছে তারা একটি এন্টি কমপিটিশন মূল্য নির্ধারণ করে বাজারে প্রভাব বিস্তার
করে ব্যবসা করে। এরমধ্যে দুটি
কোম্পানিকে ৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এক কোম্পানিকে ৫ কোটি এবং আরেকটি
কোম্পানিকে ৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশনের আইন অনেক শক্তিশালী। যেমন ভোক্তা আইনে তিন
লাখের বেশি জরিমানা করা যায় না। কিন্তু এই আইনে ৫০০ কোটি টাকার বেশি
জরিমানা করতে পারে। এজন্য আমাদের সবার উচিৎ প্রতিযোগিতা কমিশনকে সহযোগিতা
করা। যাতে প্রতিযোগিতাহীন মূল্য নির্ধারণ করে মানুষকে ঠকাতে না পারে।
এতে বাজারে কি কোনো প্রভাব পড়েছে? জানতে চাইলে সচিব বলেন, বাজারে অবশ্যই
প্রভাব পড়েছে। এই যে ডিমের দাম কমানো হয়েছে, মুরগির দাম যে স্থিতিশীল আছে
আমি মনে করি এটার একটা প্রভাব আছে।
সরকার যে তিনটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলো, কিন্তু সেই দামে বিক্রি
হচ্ছে না বাজারে। এতে কী লাভ হলো? —এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, আমাদের
যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছি সেটা অনেক দিন ধরে চলছে। ভোক্তা কত দামে পণ্য কিনবেন
সে দাম বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। এতে সয়াবিন বা পামওয়েলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
কারণ সেখানে সরবরাহ আছে। কিন্তু ভোক্তাপর্যায়ে চিনির দাম মানা হচ্ছে না।
কারণ সরবরাহ কম। এছাড়া ডলারের বিনিময় হার কমে গেছে। ডলারের দাম বেশি। সেই
প্রতিফলনটাই দেখা যাচ্ছে। ৯৯ ভাগ চিনি বিদেশ থেকে আসে তাই আমদানি মূল্যের
ওপর নির্ভর করতে হয়। তবে সরকারের নজরদারি থাকলে, মনিটরিং থাকলে যেটা অনেক
বেশি বাড়তে পারতো সেটা বাড়বে না। সেখানেই সফলতা।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যসচিব বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়লে
পণ্যসামগ্রি মানুষের কাছে পৌঁছাবে। যেহেতু আমাদের দেশে প্রচুর নিম্ন আয়ের
মানুষ রয়েছে তাদের খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের কর্তব্য। খাদ্যনিরাপত্তা
দেখতে গিয়ে আমরা খাদ্যপণ্যগুলো দাম মনিটরিং করি। কেউ বেশি মূল্য নিচ্ছে কী
না সেখানে হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হয়। কিন্তু মূল্য বেঁধে দেওয়া মূল উদ্দেশ্য
না। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাজার স্থিতি রাখা। মানুষ যাতে তার প্রয়োজনীয়
পণ্য পায়। সেজন্য জনগণকে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে হস্তক্ষেপ করা
হয় বা মূল্য সাধারণত বেঁধে দিয়ে থাকি। আবার ব্যবসার প্রচারে উদ্যোক্তাদের
অনেক ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়। এরকম বিভিন্ন উদ্দেশ্য সাধন করতে গিয়ে আমরা
ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।