চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নগরের বায়োজিদ লিংক রোড সংলগ্ন এলাকাসহ ২৬ টি পাহাড়ে ও পাহাড়ের পাদদেশে দৃশ্যমান সতর্কীকরণ সাইন বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে।
বর্তমানে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা/বিভাগের মালিকানাধীন ১৬ টি এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রায় ১০ টি পাহাড় সহ সর্বমোট ২৬ টি পাহাড়ে প্রায় ৬৫৫৮ টি অবৈধ বসবাসকারী পরিবার ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছে।
বিগত ৮ আগস্ট ২০২৩ তারিখে অনুষ্ঠিত পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৭তম সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাই কোর্ট বিভাগের ৭৬১৬/২১ রিট পিটিশন আদেশ মোতাবেক পাহাড় ও টিলা কর্তন বা মোচন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে মাঠে নেমেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করলে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুসারে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।
এই সময় চট্টগ্রামের সুযোগ্য জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান এসব পাহাড়ে সাইনবোর্ড স্থাপন করেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: আবদুল মালেক, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর মাজহারুল ইসলাম , হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ.বি.এম মশিউজ্জামান, কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: উমর ফারুক, হাটহাজারী সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: আবু রায়হান চট্টগ্রাম মহানগরের সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) খন্দকার মাহমুদুল হাসান, আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ খায়রুল ইসলাম চৌধূরী, চান্দগাও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফেরদৌস আরা, বাকলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ. এফ. এম শামীম, স্টাফ অফিসার ও সহকারী কমিশনার প্লাবন কুমার বিশ্বাস সহ আরো অনেকে।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, পাহাড় ধসের বিষয়ে মাইকিং , লিফলেট বিতরণ ও সংবাদ ও টিভি চ্যানেল এর মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে পাহাড় কাটার দায়ে প্রায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে এবং মনিটরিং ও নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় পাহাড় কাটা প্রতিরোধ করতে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বলেন, পাহাড় খেকোরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারীদের নিরাপত্তার স্বার্থে উচ্ছেদ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পাহাড়কাটা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে এসব বিজ্ঞপ্তি দেখে অন্তত জনসাধারণ পাহাড় কাটার বিষয়ে সচেতন হবে। পাহাড়ে অবৈধ দখল ও কাটতে দেখলে তাঁরা সরাসরি থানায়, পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করতে পারবেন।পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। পাহাড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদেও নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
এছাড়াও সংশিষ্ট সরকারি সংস্থা নিজ উদ্ধোগে পাহাড়ে অবৈধ ভাবে বসবাস কারীদের যাতে সরিয়ে ফেলে সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
যেসব পাহাড়ে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে লিংকরোড ও জঙল সলিমপুর সংলগ্ন পাহাড়সহ পলিটেকনিকেল হট স্টেশন সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ, ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় ফৈাজি ফ্লাওয়ার মিল্ক সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ, ষোলশহর স্টেশন সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ, ফয়েজলেক এলাকায় ১, ২, ৩ নং ঝিল সংলগ্ন পাহাড়, মতিঝর্ণা ও বাটালিহীন সংলগ্ন পাহাড়, লেকসিটি আবাসিক এলাকার সংলগ্ন বিজয়নগর, বাটালি হিল ও মতিঝর্ণা অংশ, ফিরোজ শাহ হাউজিং এস্টেট সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ, কৈবল্যধাম হাউজিং স্টেট সংলগ্ন পাহাড়ের পাদদেশ, আমিন জুট মিলস কলোনি সংলগ্ন ট্যাংকির পাহাড়।উত্তর পাহাড়তলী মৌজার ১৫০ দাগের খাস খতিয়ানভুক্ত পাহাড় (জয়ন্তিকা পাহাড় সংলগ্ন), বি এস ২১২ ও ২১৩ দাগের পাহাড় ( মুরগির ফার্ম হয়ে গার্ডেন ভিউ সংলগ্র),আকবর শাহ বেলতলী পাহাড়,পলিটেকনিক কলেজ সংলগ্ন পাহাড়, লালখান বাজার জামিয়াতুল উলুম মাদ্রাসা সংলগ্ন পাহাড়, হারুন খান সাহেবের পাহাড়, নাসিয়াঘোনা এলাকা, চিড়িয়াখানার পিছনের পাহাড়, মধুশাহ পাহাড়, জালালাবাদ সংলগ্ন পাহাড়। নাগিন পাহাড়। ফরেস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট সংলগ্ন মীর মোহাম্মদ হাসানের পাহাড়। এম আর সিদ্দিকীর পাহাড়। মিয়ার পাহাড়। বেড়া ফকিরের পাহাড় (রৌফাবাদ ও অক্সিজেন)।