বাড়ির দরজা ভেঙে মা ও দুই পুত্রসন্তানের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার, সাত মাসের ওজিহা অক্ষত

Date: 2023-10-17
news-banner

ইফতেখার উদ্দিন : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় এক প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চরছয়ানি দক্ষিণপাড়া গ্রামের প্রবাসী শাহ আলমের বাড়ির দরজা ভেঙে ভেতর থেকে তাঁদের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।


নিহত ব্যক্তিরা হলেন সৌদিপ্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী জেকি আক্তার (৪০) এবং তাঁর দুই সন্তান—মাহিন ইসলাম (১৬) ও মহিন ইসলাম (৬)। শাহ আলমের সাত মাস বয়সী কন্যাশিশু ওজিহাকে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।


সৌদিপ্রবাসী শাহ আলমের দুই ছেলে ও এক কন্যাসন্তান নিয়ে চরছয়ানি গ্রামের একটি পাকা ভবনে বসবাস করতেন স্ত্রী জেকি আক্তার। আজ সকাল ৯:৩০টার দিকে জেকি আক্তারের বাসায় যান গৃহপরিচারিকা জেসমিন আক্তার। এ সময় জেকি আক্তারের বাড়ির প্রধান ফটকে তালা ও ভেতরের দরজা বন্ধ থাকায় কলিং বেল চাপেন জেসমিন আক্তার। অনেকক্ষণ অপেক্ষা ও ডাকাডাকি করেও ভেতর থেকে কোনো সাড়া-শব্দ পাননি তিনি। দরজা না খোলায় জেসি আক্তারের পাশের বাড়িতে থাকা স্বজন ইয়াসমিন আক্তারের কাছ থেকে চাবি নিয়ে প্রধান ফটক খোলেন তাঁরা। এ সময় ভেতরে গিয়ে ভবনের সব দরজা-জানালা বন্ধ দেখতে পান তাঁরা। পরে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে বিষয়টি বাঞ্ছারামপুর থানা-পুলিশকে জানান।


খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে, মেঝেতে জেকি ও তাঁর বড় ছেলে মাহিনের লাশ এবং পাশের শৌচাগারে ছোট ছেলে মহিনের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পায়। এ সময় সাত মাস বয়সী কন্যাসন্তান ওজিহাকে অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।


আইয়ুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, বাড়ির চারপাশে দেয়াল আছে। বাড়িতে দুটি পাকা ভবন। পূর্ব পাশের ভবনে সুলতানের প্রবাসী ছেলে শাহ আলমের পরিবার বসবাস করে। কলাপসিবল গেটসহ দরজা ও জানালা সবকিছু বন্ধ ছিল। ঘরের ভেতরের মেঝে রক্তে ভেসে গেছে। জেকি আক্তারকে খুন করার পর চিনে ফেলায় হয়তো দুই ছেলেকে তারা খুনে করে বলে মনে হচ্ছে। খুন করার পর সম্ভবত দ্বিতীয় তলার ছাদসংলগ্ন আমগাছ দিয়ে তারা নেমে পালিয়ে গেছে। কারণ, সেখানে রক্তের ছাপ রয়েছে।


অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মো. সিরাজুল ইসলাম ও বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম বলেন, ঘরের দরজা ও জানাল ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। ভেতরে আলমারিসহ সব আসবাব অক্ষত ছিল। কোনো ডাকাতি বা কোনো কিছু চুরি হয়নি। মেঝেতে তাঁদের লাশ পাওয়া গেছে।


জেকি আক্তারের মাথার পেছনে ও কোমরে, মাহিনের মাথার পেছনে ও মহিনের হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁরা জানান, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি দলসহ পুলিশের একাধিক দল ঘটনা তদন্তে মাঠে নেমেছে। ভোরের দিকে পূর্বপরিচিত কারও দ্বারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, বাড়ির কোনো মালামাল চুরি বা লুট হয়নি।

১৭ই অক্টোবর ২০২৩

image

Leave Your Comments