রমজানে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ

Date: 2024-03-14
news-banner
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ রমজান মাস অত্যন্ত সম্মানের মাস। এই মাসে কেউ রোজা পালনে অপারগ হলেও জনসম্মুখে আহার করা থেকে বিরত থেকে রমজান মাসকে শ্রদ্ধা করে। যাদের উপর রোজা পালন করা ফরজ হয়েছে তাদের এই মাসে রোজা বা সিয়াম পালন করা আবশ্যক। রমজান মাসে সিয়াম পালন করা এইটা আল্লাহর আইন। এই আইনকে সম্মান করার জন্য নাইজেরিয়ায় পবিত্র রমজান মাসে রোজা না রাখা মুসলমানদের গ্রেপ্তার করছে দেশটির ইসলামিক পুলিশ। মূলত আফ্রিকার এই দেশটির একটি প্রদেশে রোজার মাসে দিনের বেলা খাবার খেতে দেখার পর বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বুধবার (১৩ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় কানো প্রদেশের ইসলামিক পুলিশ গত মঙ্গলবার ১১ জন মুসলমানকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদেরকে রমজানের রোজার সময় খাবার খেতে দেখা গেছে।

বিবিসি বলছে, কানোতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে এবং এখানে ধর্মনিরপেক্ষ আইনের পাশাপাশি ইসলামি আইনি ব্যবস্থা অর্থাৎ শরিয়া আইনও কার্যকর রয়েছে। আর ইসলামিক পুলিশ ‘হিসবাহ’ নামে পরিচিত এবং প্রতি বছর রমজান মাসে তারা খাবারের দোকান এবং বাজারে তল্লাশি চালিয়ে থাকে।
গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তারকৃত ১১ জনের মধ্যে ১০ জন পুরুষ এবং একজন নারী। বিবিসি বলছে, গ্রেপ্তারের পর তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আর একটি রোজাও মিস করবে না বলে শপথ করার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

হিসবাহের মুখপাত্র লওয়াল ফাগে বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমরা মঙ্গলবার ১১ জনকে পেয়েছিলাম যার মধ্যে একজন নারীও ছিলেন, যিনি চিনাবাদাম বিক্রি করছিলেন এবং তাকে তার জিনিসপত্র থেকে খেতে দেখা গেছে এবং পরে কিছু লোক আমাদের এই বিষয়টি জানায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অন্য ১০ জন ছিলেন পুরুষ এবং শহরজুড়ে বিশেষ করে বাজারের কাছাকাছি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।’
তিনি বলছেন, অনুসন্ধান ও তল্লাশি অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে অমুসলিমরা এই অভিযানের আওতার বাইরে।

লওয়াল ফাগে বলছেন, ‘আমরা অমুসলিমদের গ্রেপ্তার করি না কারণ এটি (রোজা) তাদের পালন করার বিষয় নয় এবং শুধুমাত্র একটি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলেই আমরা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করি। আর তা হচ্ছে, যাদের রোজা রাখার কথা সেই সব মুসলমানদের কাছে বিক্রি করার জন্য যারা খাবার রান্না করে।’

যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাদের সম্পর্কে ইসলামিক পুলিশের এই মুখপাত্র বলেন, তারা এখন থেকে রোজা রাখা শুরুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুক্তি পেয়েছে এবং ‘তাদের মধ্যে কারও কারও পরিবার যেন তাদেরকে পর্যবেক্ষণ করে সে জন্য আমাদের তাদের আত্মীয় বা অভিভাবকদেরও ডাকতে হয়েছিল’।
বিবিসি বলছে, মাত্র দুই দশক আগে নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলের ১২টি প্রদেশে ধর্মনিরপেক্ষ আইনের পাশাপাশি শরিয়া আইনও চালু করা হয়েছিল। এসব প্রদেশের সবকটিতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনসংখ্যা রয়েছে।

উল্লেখ্য, রমজান ইসলামি ক্যালেন্ডারের নবম মাস। ইসলামে এই মাসের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই মাসেই পবিত্র কোরআনের প্রথম আয়াত মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর কাছে অবতীর্ণ হয়েছিল।

এছাড়া ইসলামের অন্যতম এক স্তম্ভ পবিত্র রমজান মাস। প্রত্যেক বছর অত্যন্ত ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মুসলিম বিশ্বে পবিত্র এই মাস পালন করা হয়। এক মাস সংযম পালনের পর মুসলমানরা শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেন।
image

Leave Your Comments