অপরাধী যত প্রভাবশালী হোক না কেনো, শাস্তি পেতেই হবে: ওবায়দুল কাদের

Date: 2024-05-24
news-banner
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার কাউকে প্রটেকশন দেয় না। অপরাধীকে আমরা অপরাধী হিসেবে দেখি। অপরাধী যত প্রভাবশালী হোক না কেনো, শাস্তি পেতেই হবে। 

শুক্রবার (২৪ মে) সকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক আইজিপির সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও সাবেক সেনাবাহিনী প্রধানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় সরকার বিব্রত কি না? প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্যক্তি যত প্রভাবশালী হোক অপরাধ করতে পারে, প্রশ্ন থেকে যায় সরকার অপরাধের শাস্তির ব্যাপারে সৎ সাহস দেখিয়েছে কি না। শেখ হাসিনা সরকারের সেই সৎ সাহস আছে। কেউ পার পাবে না। 

তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগ, দুদক স্বাধীন। সেখানে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে আমরা তাকে প্রটেক্ট করতে যাব না। সেখানে কোনো সাবেক আইজিপি বা কোনো সাবেক সেনাপ্রধান যে-ই থাকুক না কেন সরকারের কাউকে প্রটেকশন দেয়ার কথা নেই।

আবরার হত্যাকাণ্ডে যাদের দণ্ড হয়েছে তাদের সবাই ছাত্রলীগের উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার তাদের প্রটেকশন দিতে যায়নি। বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে যাদের ফাঁসি হয়েছিল তাদের সরকার প্রটেকশন দিতে যায়নি। ব্যক্তি অপরাধ করতে পারে। কথা হচ্ছে সরকার প্রটেকশন দিচ্ছে কি না। শেখ হাসিনা সরকার এখানে জিরো টলারেন্স। অপরাধ করলে শাস্তি তাকে পেতেই হবে।

বিএনপির মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরে প্রসঙ্গে কাদের বলেন, তার মানসিক ট্রমা ভয়ংকর পর্যায়ে। তারা নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে ব্যর্থ। এখন এদিকও নেই, ওদিকও নেই। এখন তো বন্ধুরা এসেও তাদের উৎসাহিত করে না। আগে তো সকালে ঘুম থেকে উঠেই মার্কিন দূতাবাসে গিয়ে নাস্তা করতো। বিদেশি বন্ধুরা ক্ষমতায় বসাবেন, সে স্বপ্নও এখন শেষ।
 
এ সরকারের আমলে কোনো নিরীহ মানুষ কোনো প্রকার হয়রানি, জেলজুলুমের মুখোমুখি হয়নি দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা অপরাধীই। তাদের বিএনপি বলে আটক করা হয়নি। আটক করা হয়েছে খুন, সন্ত্রাস, অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আগে ঘুম থেকে উঠেই মির্জা ফখরুল মার্কিন দূতাবাসে হাজির হয়ে নাস্তা করতে যেতেন, রাতেও খুঁজে পাওয়া যেত না। বিদেশিরা ক্ষমতায় বসাবে সে কর্পূরও উড়ে গেছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোন সাধারণ নাগরিক জেল-জুলুম-হয়রানির মুখোমুখি হয়নি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন,  যারা পুলিশ মেরেছে, পুলিশ হাসপাতালে অগ্নি সংযোগ করেছে  তারা তো অপরাধী। তাদের বিএনপি হিসেবে আটক করা হয়নি। আটক করা হয়েছে সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাসে জড়িত থাকার অপরাধে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা অস্ত্রসহ আটকের পর তার পক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খুনিদের পক্ষে বিএনপির যে প্র্যাকটিস এখনো সেটা করে যাচ্ছে। বিএনপির সব নেতাই বাইরে। তাহলে তাদের কে নির্যাতন করছে? 

আওয়ামী লীগ সরকারের জনভিত্তি নেই বিএনপির এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ৪২ শতাংশের বেশি মানুষ ভোটকেন্দ্রে এসেছে। বাংলাদেশের এই হার অন্যান্য দেশের তুলনায় সন্তোষজনক। বিএনপির আমলে ১৫ই ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে বিবিসি জানিয়েছে ভোটার উপস্থিতি ছিল পাঁচ শতাংশ, আর তখনকার নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল উপস্থিতি ২১ শতাংশ। এখনকার নির্বাচনে উপস্থিতি তার দ্বিগুণ। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে নির্বাচন কমিশন বলেছে উপস্থিতি ৩৬ শতাংশের বেশি। আর দ্বিতীয় ধাপে ৩৭ শতাংশের বেশি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা জনগণের প্রতিনিধি। আমরা জনগণের ইচ্ছায় দেশ শাসন করছি। বিএনপি পথ হারিয়ে পথহারা পথিকের মতো বেসামাল বক্তব্য দিচ্ছে। 

টিকটক, ফেসবুকে বিএনপি এত মিথ্যাচার ও নোংরাভাবে আমাদের আক্রমণ করে। এমনকি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে নোংরা ভাষায় আক্রমণ করে। এরপরও তারা বলে- সরকার নাকি তাদের ওপর জুলুম করছে। আসলে বিএনপির এসব বক্তব্য অবান্তর। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা অর্জন করেছে, দখল নয়। বিএনপি বলছে দখল। জনগণের ভোটে আমরা নির্বাচিত হয়েছি। নির্বাচনের পর পৃথিবীর অনেক দেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছে এবং একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। আমরা বিএনপিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠিটি পড়তে বলব।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দী,  মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।
image

Leave Your Comments