প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ, তথা সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সরকারের পাশাপাশি পরিবহণ মালিক, শ্রমিক, যাত্রী, পথচারী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে একযোগে কাজ করতে হবে।
আজ রোববার (২২ অক্টোবর) ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস’ উপলক্ষে গতকাল শনিবার দেওয়া বাণীতে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আইন মেনে সড়কে চলি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পর ক্ষতিগ্রস্ত সব সড়ক ও সেতু মেরামত করে যোগাযোগ অবকাঠামো পুনঃস্থাপন করেন। তিনি ১৯৭৪ সালের মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত সব সেতু পুনঃনির্মাণ করে চলাচলের উপযোগী করেন। পাশাপাশি তিনি ৪৯০ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ করেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জাতির পিতা সড়ক পরিবহণ খাতকে অগ্রাধিকার প্রদান করে আধুনিক সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু করেন। আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ২০৩০ এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিরাপদ সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়নের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন, সময় সাশ্রয়ী যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণ সম্প্রসারণের নিমিত্তে কাজ করে যাচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে করা স্বপ্নের বহুমুখী পদ্মা সেতুসহ সমগ্র দেশে বিস্তৃত যোগাযোগ ব্যবস্থা জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়নের পাশাপাশি নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা জোরদার করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করি। সড়ককে নিরাপদ করতে ডিভাইডার স্থাপন, বাঁক সরলীকরণ, সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, মহাসড়কে চালকদের জন্য বিশ্রামাগার নির্মাণ ও গতি নিয়ন্ত্রক বসানোসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘সড়ক পরিবহণ সেক্টরে শৃঙ্খলা আনয়ন, দক্ষ চালক তৈরি এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স গঠন করেছি। আধুনিক, প্রযুক্তিনির্ভর এবং টেকসই ও নিরাপদ মহাসড়ক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের সরকারের লক্ষ্য।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারই প্রথম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারকে এককালীন অন্যূন পাঁচ লাখ টাকা এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গহানিসহ আহত ব্যক্তিকে অন্যূন তিন লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস সেন্টার চালু করা হয়েছে। ই-ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রবর্তনের মাধ্যমে বিআরটিএর প্রায় সব সেবা ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ছয় দফা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ রোড সেফটি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাই নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করবেন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা অনাকাঙ্ক্ষিত সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে পারব, ইনশাল্লাহ।’