সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। তবে বিকেল ৩টার পর থেকেই আকাশজুড়ে মেঘের আনাগোনা শুরু হয়। উপকূলীয় অঞ্চলসহ বিভিন্নস্থানে থেমে থেমে শুরু হয় মাঝারি বৃষ্টি।
পটুয়াখালীর পুরো উপকূল জুড়ে এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আবহাওয়া অধিদফতরের সংকেতের ওপর নির্ভর করছে মানুষের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার বিষয়টি। ইতিমধ্যে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দিলেও ঘর ছাড়েনি উপকূলের কোনো মানুষ। তবে সতর্কতা অবলম্বন করে চলছে সব ধরনের প্রস্তুতি। উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সিপিপি সদস্যসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।
উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের গোড়াখাল গ্রামের বাসিন্দা মহারাজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সমুদ্র এবং নদীর মোহনা এলাকায় আমরা বসবাস করি। ঘূর্ণিঝড় সংকেত এলে সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকি পরিবার-পরিজন নিয়ে। বিগত দিনের ঘূর্ণিঝড়গুলোতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাই ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত মানেই ভয় ও আতঙ্ক।
কুয়াকাটা এলাকার সিদ্দিক প্যাদা ঢাকা পোস্টকে বলেন, দিনভর আকাশে কখনো মেঘ আবার কখনো বৃষ্টি হচ্ছে। এভাবেই চলছে গতকাল থেকে। দুর্যোগকালীন আবহাওয়ার পরিবর্তন লক্ষ্য করছি। এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মানুষের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি বুঝে আশ্রয়কেন্দ্রে যাব আমরা।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বর্তমানে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা উপকূলীয় বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছি এবং উপজেলার সব আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেজন্য উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকসহ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী টিম প্রস্তুত রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ প্রভাবে সকাল থেকে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি, নদীর পানি জোয়ার স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়েছে। তবে নদ-নদী স্থির রয়েছে। আবহাওয়া অফিসের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমে জানানো হয়েছে পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ক্রমিক নম্বর-১০ থেকে জানা যায়, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’ উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে এবং বর্তমানে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ৪ নম্বর সতর্কতা সংকেত নামিয়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ সময় বাতাসের গতি ৮০-১০০ কিলোমিটারের আশপাশে থাকতে পারে। বর্তমানে এটি খুব দ্রুত উত্তর পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঘণ্টায় প্রায় ২০-২২ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে আসছে। যার ফলে এটি আজকে মধ্যরাত থেকে আগামীকাল দুপুরের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করতে পারে।