মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য : প্রধানমন্ত্রী

Date: 2024-07-15
news-banner
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেমে দেওয়া স্লোগান নিয়ে মনোক্ষুণ্ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটিকে দুঃখজনক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, রাজাকার বাহিনী যেভাবে এদেশে অত্যাচার করেছে। তাদের সেই অত্যাচার, রাস্তায় লাশ পড়ে থাকা এরা দেখেনি, তাই নিজেদের রাজাকার বলতে তাদের লজ্জা হয় না।’

সোমবার (১৫ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সমূহের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ‘বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর’ এবং ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, লাখো শহীদ রক্ত দিয়ে গেছে, লাখো মা-বোন নির্যাতিতা। তাদের এ অবদান ভুললে চলবে না। তা মনে রাখতে হবে। পাকিস্তানি হানাদার-রাজাকার এ দেশে এত অত্যাচার করেছে। আমার খুব দুঃখ লাগছে, কালকে যখন শুনি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও বলে তারা রাজাকার। তারা কি জানে ৭১ সালের ২৫ মার্চ সেখানে কি ঘটেছিল। তিনশ মেয়েকে হত্যা করেছিল। ৪০ জনকে ধর্ষণ করেছিল, এদের ধরে নিয়ে পাকিস্তানি ক্যাম্পে নিয়ে গিয়েছিল। অনেক মেয়ে শাড়ি-ওড়না দিয়ে ফাঁসি দিয়েছিল বলে তাদের কাপড় পড়তে দেওয়া হতো না। ওই একটা পেটিকোট পড়িয়ে বসিয়ে রাখতো। দিনের পর দিন তাদের পাশবিক অত্যাচার হতো। যখন তাদের উদ্ধার করা হয়, আমাদের মিত্র শক্তি ভারতের এক শিখ সৈন্য তারা মাথার পাগড়ি খুলে ওই মেয়ের গায়ে পেঁচিয়ে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এটা একটা ঘটনা না, বহু ঘটনা এরকম।

তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই হচ্ছে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। লাখো শহীদ রক্ত দিয়ে গেছেন, লাখো মা-বোন নির্যাতিতা। তাদের এই অবদান ভুললে চলবে না। এটা মনে রাখতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের গেরিলা যুদ্ধ হয়েছে, এখানে শান্তি কমিটিতে, কেউ রাজাকার কমিটিতে ছিল, কিন্তু অনেকে মানুষের ক্ষতি করেনি। কিন্তু যে বাহিনীগুলো তারা তৈরি করেছিল, তাদের হাতে অস্ত্র দিয়েছিল এবং তাদেরকে দিয়ে মানুষের ক্ষতি করতো, অত্যাচার করতো, লুটপাট করতো, গণহত্যা চালাতো। তাদের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, তাদের বিচার করে, অনেকের ফাঁসিও দিয়েছি। বিচারে যারা নির্যাতিত তারা ন্যায় বিচার পেয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য এখন যখন শুনি মেয়েরাও স্লোগান দেয়, কোন দেশে আমরা আছি, এরা কি চেতনায় বিশ্বাস করে? কি শিক্ষা তারা নিলো? কি তারা শিখলো?’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্বের, জাতির পিতার একটি ডাকে এ দেশের মানুষ, ঘর-বাড়ি, পরিবার সব কিছু ছেড়ে দিয়ে যুদ্ধে গেছে, জীবনের মায়া ত্যাগ করে যুদ্ধ করে বিজয় এনে দিয়েছে। আর এই যারা বাহিনীতে (রাজাকার-আল বদর-আল শামস) ছিল তারা এদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে। সেটা ভুলে গেলে চলবে না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সেই শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নিয়ে, তাহলেই এদেশ এগিয়ে যাবে। সেটা যে বাস্তবতা ৭৫ এর পর যারা ক্ষমতায় ছিল ২১ বছর, তারপর ৯ বছর দেশকে কি দিতে পেরেছে? কিচ্ছু দিতে পারেনি। কিন্তু আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করি। যখন ক্ষমতায় এসেছি মাত্র ১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ আজকে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। বিশ্বের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত বাংলাদেশ। সেই দলটা তো থাকতে হবে।’
image

Leave Your Comments