অ্যাপল-গুগলের উপর নিষেধাজ্ঞা

Date: 2025-01-01
news-banner
দেশটির টিংকাত কোম্পোনেন দালাম নেগারি (টিকেডিএন) নীতির আওতায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ৪০ শতাংশ যন্ত্রাংশের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়ায় আইফোন ১৬ এবং গুগল পিক্সেল ফোনের বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ইন্দোনেশিয়া সরকার এই নিষেধাজ্ঞা জারি করে। স্থানীয় শিল্পের উন্নয়ন এবং দেশীয় প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে টিকেডিএন নীতিটি তৈরি করা হয়। তবে এই নীতি দেশের বৃহৎ প্রযুক্তিপ্রেমী জনগোষ্ঠীর জন্য একটি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উত্তর সুমাত্রার রাজধানী মেদানের বাসিন্দা এবং একজন চিকিৎসক উইনস্টন এই নিষেধাজ্ঞার কারণে নতুন আইফোন ১৬ কেনার ইচ্ছা বাদ দিয়েছেন। তিনি পূর্বে সিঙ্গাপুর থেকে আইফোন ১১ কিনেছিলেন, যা ইন্দোনেশিয়ার তুলনায় ২৫০($)ডলার সস্তা ছিল। কিন্তু ২০২২ সালে ইন্দোনেশিয়া সরকার ফোন নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা জারি করলে তার ফোন কাজ করা বন্ধ করে দেয়।

দেশটি ২০২৪ সালে প্রায় ২২,০০০ গুগল পিক্সেল এবং ৯,০০০ আইফোন ১৬ আমদানি করেছিল, তবে নিষেধাজ্ঞার ফলে এই ফোনগুলো বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে চীনা ব্র্যান্ড যেমন শাওমি, অপ্পো, এবং ভিভো এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ইন্দোনেশিয়ার বাজারে আধিপত্য বজায় রেখেছে।

আইফোনের উচ্চমূল্য অনেক ইন্দোনেশিয়ানদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে থাকায় ব্যাপক প্রতিবাদ না হলেও, এই নিষেধাজ্ঞা প্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি করেছে। দেশটির চেম্বার অফ কমার্সের প্রধান খাইরুল মহল্লি বলেছেন, টিকেডিএন নীতি স্থানীয় শিল্পকে রক্ষা করতে চায়, তবে এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

অ্যাপল এই নিষেধাজ্ঞা কাটানোর জন্য ইন্দোনেশিয়ায় ১০০($) মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে দেশটির শিল্প মন্ত্রণালয় বলেছে, এটি ন্যায্য বিনিয়োগের পরিমাণ নয়, কারণ অ্যাপল থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামে অনেক বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করেছে। নভেম্বর ২০২৪-এ, ইন্দোনেশিয়া এই প্রস্তাবটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে।

উইনস্টনের মতো প্রযুক্তিপ্রেমীদের জন্য এটি একটি কঠিন সময়। তিনি বলেন, “আমি বুঝি এই নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক কারণে, এবং আমি আমার সরকারের পক্ষে আছি। তবে আমি আর কখনও বিদেশ থেকে আইফোন কিনব না।”

ইন্দোনেশিয়ার প্রযুক্তি বাজারে এই নিষেধাজ্ঞার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হতে পারে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে স্থানীয় শিল্প এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা এখন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
image

Leave Your Comments