ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে দুই শিশুর দেহে হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস (এইচএমপিভি) পাওয়া গেছে। একটি বেসরকারি হাসপাতালের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়েই এই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া যায়।
দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর এনডিটিভির
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রুটিন স্ক্রিনিংয়ের সময় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের নজরে আসে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার দুটি তথ্য। আক্রান্ত দুই শিশুর মধ্যে একজনের বয়স তিন মাস। চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে গেলে ওই কন্যাশিশুকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অন্য শিশুর বয়স আট মাস। বেঙ্গালুরুর এক হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তার। শিশুটির অবস্থা স্থিতিশীল এবং তাকে কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
তবে ভারতে এই প্রথম এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে মানতে নারাজ কর্ণাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দীনেশ গুন্ডু রাও।
বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘ দুই শিশুর শরীরে এইচএমপিভি’র উপস্থিতি প্রথম ঘটনা বলা ভুল হবে। কারণ ভারতে আগে থেকেই এই ভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে। শিশুরা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। এই ভাইরাসের এক থেকে দুই শতাংশ ইতোমধ্যে এখানে উপস্থিত রয়েছে। ‘
তিনি বলেন, শিশুটির পরিবারের বিদেশে সফর সংক্রান্ত কোনো তথ্য নেই। আমরা এখনও জানি না যে, চীনা ভ্যারিয়েন্ট আলাদা কি না। অন্য কোনো ভ্যারিয়েন্ট বা ভাইরাসের মিউটেশন হয়ে থাকলে সে বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
তবে এই মুহূর্তে চিন্তার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্বাস্থ্যসচিব গুপ্তা জানান, এই ভাইরাস নিয়ে চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। এইচএমপিভি ভারতেও রয়েছে। তবে এই ভাইরাসটির কোনো রূপান্তর হয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফলে এ ভাইরাস চীনের ভ্যারিয়েন্ট নাকি স্বাভাবিক এইচএমপি ভাইরাস, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। সাধারণ এইচএমপি ভাইরাসের সংক্রমণ ভারতে অতীতেও দেখা গিয়েছে বলে জানান তিনি। তবে স্বাস্থ্য দপ্তর এই সংক্রমণের ঘটনা খতিয়ে দেখছে বলে জানান স্বাস্থ্যসচিব।
নতুন আতঙ্ক দ্য হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসের (এইচএমপিভি) প্রাদুর্ভাব বেড়েছে চীন আর জাপানে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ধাঁচের এই ভাইরাসে এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে।
চীনের চ্যচিয়াং ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের চিলড্রেনস হাসপাতালের শ্বাসযন্ত্র রোগ বিভাগের প্রধান থাং লানফাং জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এইচএমপিভি সংক্রমণ মৃদু হয়। তবে কিছু শিশুর সংক্রমণের পর নিউমোনিয়া হতে পারে। শিশু, বয়স্ক এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন ব্যক্তিদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, দুর্বলতা, কাশি এবং শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্নও হতে হবে।
এই ভাইরাসের জন্য নির্দিষ্ট কোনও অ্যান্টিভাইরাল চিকিৎসা বা টিকা নেই বলে উল্লেখ করেছেন চীনের বিশেষজ্ঞরা। বিশ্রাম, হালকা খাবার, উপযুক্ত পোশাক পরা, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া, পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখা এবং জনাকীর্ণ স্থান এড়ানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।