স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের মধ্যে প্রথমে ১০০ জনকে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে কাজ দেয়া হবে। পর্যায়ক্রমে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এ ছাড়া অন্যান্য মন্ত্রণালয়ও আহতদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেবে। গতকাল পুলিশের বিশেষ শাখার প্রধান কার্যালয় (এসবি) ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কার্যালয় পরিদর্শন শেষে এই তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অনেকে নিহত এবং আহত হয়েছেন। যারা আহত হয়েছেন তাদের কর্মসংস্থানের একটা ব্যবস্থা কীভাবে করা যায় সে বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। যারা আহত হয়েছেন তাদের পুলিশে চাকরি দেয়ার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আপাতত ১০০ জন আহতকে দিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি; পরবর্তী সময়ে আমরা এই সংখ্যাটা আরও বাড়াবো।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এর আগে এক হাজার শিক্ষার্থীকে ট্রাফিক ডিউটিতে নেয়ার জন্য প্রোপোজাল লেটার দেয়া হয়। যারা তিন থেকে চার ঘণ্টা ডিউটি করবেন। এখন পর্যন্ত ৪০০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর বাইরেও ট্রাফিক ডিউটিতে কাজ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের নিয়োগের জন্য প্রপোজাল লেটার দেয়া হয়। আশা করেছিলাম তাদের অনেককে পাবো। কিন্তু আশানুরূপ সাড়া পাইনি। আমরা ৫০০ জনকে দিয়ে শুরু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত ৫০ জনের মতো পেয়েছি। লেখাপড়ার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ট্রাফিকে কাজ করার বিষয়টা কেমন হবে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তারা যেন পড়াশোনা ঠিক রাখতে পারে, সে জন্য তাদের আমরা সময়টা কম দিয়েছি। তারা যেন পড়াশোনাও করতে পারে এবং নিয়ন্ত্রণেও কাজ করতে পারে সেই ব্যবস্থা করেছি। তাদের একটা সম্মানীও দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে সব থেকে বড় সমস্যা ছিল মানিলন্ডারিং। এটা নিয়ে আমি সিআইডি প্রধানকে ইন্সট্রাকশন দিয়েছি। বলেছি, দ্রুত বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরির ঘটনার প্রতিবেদন দেয়ার জন্য। তদন্তের নামে সময়ক্ষেপণ করে লাভ নেই। আমি একটা রিপোর্ট চাই যে, কারা কারা মানিলন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত সেটা আমি সিআইডিকে বলেছি। যদি তদন্তের নামে দুই তিন বছর চলে যায় তাহলে এটার কোনো কার্যকারিতা থাকে না।
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব পালনের পাঁচ মাস হয়েছে, এখন পর্যন্ত কী ধরনের উন্নতি আপনারা করেছেন- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা মিলিয়ে দেখেন, আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে কিনা। পুলিশ তাদের কাজ শুরু করেছে। পুলিশ এখন একটু সময় নিয়ে কাজ করছে। রাস্তাঘাট চিনতে সময় লাগছে তাদের। গাড়ি নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। আমরা এটাকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেকে পালিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে আপনারা কী ব্যবস্থা নিয়েছেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ৫-৬ই আগস্ট কোনো সরকারই ছিল না। তখন অনেকে পালিয়ে গেছেন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রতিবেশী দেশে চলে গেছেন অনেকে। তখন তো আমরা ছিলাম না। তবে আমরা সরকারে আসার পর কেউ পালিয়ে গেছে কিনা সেটা বলেন। এরপরও যদি কেউ গিয়ে থাকেন বিষয়টি আমরা দেখবো।