থাইল্যান্ডের সাংবিধানিক আদালত দেশটির প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে আনা নৈতিক লঙ্ঘনের অভিযোগ গ্রহণ করে তাকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেন। নয় সদস্যের বেঞ্চের মধ্যে সাতজন বিচারক বরখাস্তের পক্ষে মত দেন। প্রধানমন্ত্রীকে নিজের পক্ষে তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।
আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় পেতংতার্ন বলেন, "আদালতের রায় আমি মেনে নিয়েছি। আমি সব সময় আমার দেশের জন্য সর্বোত্তম কাজ করার চেষ্টা করেছি।"
বিশ্লেষকদের মতে, এই রায় থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে নতুন করে অস্থিরতা ডেকে আনতে পারে। থামাসাত বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিশ্লেষক পুরাবিচ ওয়াতানাসুক বলেন, "আদালতের চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করবেন। তবে এই অনিশ্চয়তার কারণে সরকারের স্থিতিশীলতা আরও দুর্বল হতে পারে।"
ধারণা করা হচ্ছে, উপপ্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুনগ্রুংরুয়াংকিত সাময়িকভাবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিতে পারেন, যদিও সরকারিভাবে এখনো তা নিশ্চিত করা হয়নি।
এর আগে গত বছর একই ধরনের অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী স্রেঠা থাভিসিনকে বরখাস্ত করেছিল এই আদালত। বিরোধীদের অভিযোগ, রাজতান্ত্রিক অভিজাতদের ঘনিষ্ঠ আদালত ও নির্বাচন কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনেই বেশি সক্রিয়।
সম্প্রতি একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়াকে কেন্দ্র করে পেতংতার্নের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। মে মাসে কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষে এক সেনার মৃত্যুর ঘটনায় তিনি কম্বোডীয় সিনেট প্রেসিডেন্ট হুন সেনের সঙ্গে ফোনে আলোচনা করেন। ওই ফোনালাপে তাকে থাই সেনাবাহিনীর একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে সমালোচনা করতে শোনা যায়, যা দেশজুড়ে ক্ষোভের জন্ম দেয়। এর জেরেই রাজধানী ব্যাংককে হাজার হাজার মানুষ তার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে।
ফাঁস হওয়া এই ফোনালাপের পর ক্ষমতাসীন জোট থেকে একটি বড় দল সরে দাঁড়ালে রাজা মহা বজিরালংকর্ণ নতুন মন্ত্রিসভা রদবদল অনুমোদন করেন। পেতংতার্ন নিজেই সংস্কৃতি মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তবে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত হওয়ায় তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।