যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনেক ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে। তবে এক ধনকুবের প্রযুক্তি উদ্যোক্তার সরাসরি রাজনৈতিক দল গঠন — তা একবিংশ শতকে বড় খবরই বটে।
গত ৫ জুলাই, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসের ঠিক পরদিন, ইলন মাস্ক ঘোষণা দিলেন: “America Party” নামে একটি নতুন রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মাস্ক এই ঘোষণার আগে X (সাবেক টুইটার)-এ এক জরিপ চালান, যেখানে ৬৫ শতাংশ ভোটার নতুন রাজনৈতিক বিকল্পের পক্ষে মত দেন।
এখন প্রশ্ন জাগে: কেন এই রাজনৈতিক পদক্ষেপ?
উত্তরটা আছে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে পাস হওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের “Big Beautiful Bill”-এ। বিলটি ৪.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের করছাড় ও সরকারি ব্যয় কর্তনের যে পরিকল্পনা করেছে, তাতে মাস্ক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলছেন, “এই বিল শুধু বড়লোকদের জন্য একতরফা সুযোগ, জনগণের স্বাধীনতা ও ভবিষ্যৎ অর্থনীতি এতে ধ্বংসের মুখে পড়বে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বিল–বিরোধী অবস্থান থেকেই মাস্কের নতুন দল গঠনের প্রেরণা। আবার অনেকের মতে, ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামার এটাই মাস্কের কৌশলগত জবাব।
তবে বাস্তবতা বলছে, মার্কিন রাজনীতিতে তৃতীয় পক্ষের সাফল্যের ইতিহাস বেশ দুঃখজনক। “Duverger’s Law” অনুসারে, দুই–দলীয় ব্যবস্থা এমনভাবে গঠিত যে তৃতীয় পক্ষকে টিকতে দেওয়া হয় না।
নতুন রাজনৈতিক দল মানেই নতুন আশা। বিশেষ করে এমন এক সময়ে যখন যুক্তরাষ্ট্রের দুই মূল দল (ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান) জনগণের আস্থা হারাচ্ছে। ইলন মাস্কের মতো আলোচিত ব্যক্তি, যার রয়েছে বিপুল অনুসারী ও প্রচারক্ষমতা — তার এই পদক্ষেপ অবশ্যই আলোচনার কেন্দ্রে।
তবে প্রশ্ন থাকছেই —
এটি কি দীর্ঘমেয়াদে টিকবে?
নাকি এটি কেবল এক ‘বিলিয়নিয়ার এক্সপেরিমেন্ট’?
ইলন মাস্ক কি সত্যিই জনগণের রাজনীতিতে অংশ নিতে চান, না কি এটি ট্রাম্পকে চাপে রাখার এক চাল?