নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে নদীর তলদেশে টানেলের পর এবার চালু হতে যাচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আগামীকাল (১৪ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে 'মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ফ্লাইওভার' প্রকল্পের উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) আরও দুটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন তিনি। আপাতত র্যাম্প ছাড়াই চট্টগ্রামের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হচ্ছে।
আগামী বছর র্যাম্প নির্মাণকাজ শুরু হবে। এটি চালু হলে ২০ মিনিটে বিমানবন্দরে পৌঁছে যাবেন যাত্রীরা। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ’র কর্মকর্তারা বলছেন, ‘আগামীকাল সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ায় নগরীতে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। এখনও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার হলেও এর পুরো কাজ এখনও শেষ হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের কিছুদিন পর বিমানবন্দর থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। বাকি কাজ চলমান আছে। এটি চালু হলে নগরীতে যানজট অনেকটাই কমে আসবে।
সিডিএর কর্মকর্তারা বলছেন, "শুরুর দিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ২৪টি র্যাম্প থাকার কথা থাকলেও এখন হবে ১৪টি। এখনও র্যাম্প নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। উদ্বোধনের পর এই নির্মাণকাজ শুরু হবে। তবে এখন লালখান বাজার থেকে যেসব যানবাহন বিমানবন্দর পর্যন্ত যাতায়াত করবে শুধু সেগুলো উঠতে পারবে। মাঝখানে নামার সুযোগ নেই।" এছাড়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে এখন কোনো প্রকার টোল আদায় করা হবে না। পুরোপুরি নির্মাণের পর টোল আদায় করা হবে বলে জানান তিনি।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, "বর্তমানে মূল ফ্লাইওভারের প্রায় ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে শেষ করে আমরা মূল ফ্লাইওভার চালু করবো। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর এর কিছুদিনের মধ্যেই টাইগারপাস থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত আমরা মূল ফ্লাইওভার জনসাধারণের যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেব।"
সিডিএ সূত্র জানায়, নগরীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত 'এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ' প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রথমে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। তিন বছরের মধ্যে, অর্থাৎ ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি।
দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তৃতীয় দফায় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। এ দফায় সময় বেড়েছে এক বছর। অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা।
একই সময়ে প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় বাড়িয়ে ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকা করা হয়। সিডিএর এই প্রকল্প যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-র্যাংকিন।
প্রায় ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের, ৫৪ ফুট প্রশস্ত এবং চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে থাকবে ১৪টি র্যাম্প। এরমধ্যে জিইসি মোড়ে একটি, টাইগারপাসে দুটি, আগ্রাবাদে চারটি, ফকিরহাটে একটি, নিমতলায় দুটি, সিইপিজেডে দুটি এবং কেইপিজেড এলাকায় থাকবে দুটি র্যাম্প।