ছবি: জার নিউজ, পোর্ট রানার্স দল , চট্টগ্রাম |
রোজ হাঁটাহাঁটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। নিয়মিত হাঁটলে অনেক সুফল পাওয়া যায়। দৈনন্দিন শারীরিক পরিশ্রম না হওয়ার বা কম হওয়ার কারণে এখন শরীরে বাসা বাঁধছে নানান অসুখ।
এর মধ্যে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, আর্থ্রাইটিস (বাত), ওবেসিটি বা স্থূলতা, মাংসপেশির শক্তি কমে যাওয়া, অস্টিওপোরোসিস অন্যতম। অথচ শুধু হাঁটার মাধ্যমে এর অনেকগুলো আপনি রুখে দিতে পারেন।
কখন হাঁটতে হবে:
সকালে না, বিকেলে হাঁটলে ভালো। কতখানি হাঁটবেন তা আপনার চিকিৎসক আপনার শরীর বা রোগের পরিধি বুঝে পরিমাণ নির্ধারণ করে দেবেন।
ভোরে হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো ,কারণ তখন বাতাস খুব পরিষ্কার থাকে যা ফুসফুসের জন্য উপকারী এবং ভোরের প্রকৃতি মানসিক চাপ কমাতে খুবই কার্যকরী, কিন্তু ভোরে হাঁটার সময় হয় না, এই অজুহাতে হাঁটা থেকে বিরত থাকা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
তাই আপনি আপনার ব্যস্ত সময়সূচী থেকে প্রতিদিন ৩০ মিনিট সময় বের করে হাঁটতে পারেন, তবে অবশ্যই টানা ৩০ মিনিট হতে হবে।
আপনি ভোরে হাঁটুন আর রাতে হাঁটুন , একা হাঁটুন আর আপনার বন্ধুদের সাথে হাঁটুন এতটুকু নিশ্চিত করুন যেন প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটা হয়। কারণ বর্তমান ব্যাস্ত জীবনে যেখানে আমরা অনেকেই শারীরিক পরিশ্রম করতে পারিনা তাদের সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকতে হলে হাঁটার কোনো বিকল্প নেই।
প্রথমত হাঁটার গতি হওয়া উচিত এমন যেন মিনিটে ১০০ কদম পড়ে বা ৪ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় গতিবেগে থাকে । আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে হাঁটার সময় আপনার হার্ট রেট যেন আপনার ম্যাক্সিমাম হার্ট রেট এর ৫০% থেকে ৮৫% এর মধ্যে থাকে।
এর মানে হলো হাঁটার সময় আপনার হার্ট রেট সর্বনিম্ন ৯৩ বিটস/মিনিট থেকে সর্বোচ ১৫৭ বিটস/মিনিট এর মধ্যে রাখতে হবে। তাই সুস্থ বেঁচে থাকতে হলে আমাদের প্রতিদিন কমপক্ষে ১০,০০০ স্টেপ হাঁটতে হবে আর সপ্তাহে কমপক্ষে ৫ দিন টানা ৩০ মিনিটে ঘন্টায় ৪ কিলোমিটার বেগে হাঁটতে হবে ।
যেসব রোগের ঝুঁকি কমায় :
-হার্ট ও ফুসফুস শক্তিশালী হয় প্রতিদিন হাঁটলে। সকালে নিয়মিত হাঁটলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক কমে যায়।
-সকালে হাঁটার অভ্যাস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে।
-হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ে প্রতিদিন হাঁটলে। ফলে রক্ত চলাচল ভালো হয়।
-উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিদিন ভোরে কিছুক্ষণ হাঁটুন।
-শরীরের জন্য উপকারী কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ে নিয়মিত হাঁটলে।
-ভোরের তাজা বাতাস শরীরকে কর্মক্ষম ও ফ্রেশ রাখতে সাহায্য করে।
-প্রতিদিন ভোরে কিছুক্ষণ হাঁটলে স্ট্রেস কমে ও মন ভালো থাকে।
-সপ্তাহে ৪ দিন ৪৫ মিনিট করে হাঁটলে বাড়তি মেদ কমে দ্রুত।
আরো বিস্তারিত উপকারিতা রয়েছে :
-ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাওয়া দাওয়ার নিয়মের পাশাপাশি দরকার নির্দিষ্ট সময় মেনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হাঁটা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্লাড প্রেশারের সমস্যা কমাতে ৩০ মিনিট নিয়ম করে রোজ হাঁটলে তা উপকার দেবে। এছাড়াও কোন কোন অঙ্গ ভালো রাখতে হাঁটার প্রয়োজন রয়েছে দেখে নিন।
-সারা দিনে বাড়ির ভিতর বেড রুম থেকে রান্নাঘর কিম্বা অফিসে ক্যান্টিন থেকে কিউবিকলে হাঁটলেই যে ভাবছেন মেদ খানিকটা ঝরে যাবে, তা কিন্তু নয়!
নির্দিষ্টভাবে কিছুটা সময় ধরে, নিয়ম মেনে হাঁটাহাটি হলে তবেই কিন্তু এর উপকার পাবেন। তবে শুধু যদি মেদ ঝরাবার লক্ষ্য় নিয়ে হাঁটেন তাহলে এর আনুসাঙ্গিক নানান উপকারও পাবেন! দেখে নেওয়া যাক হাঁটলে কোন কোন উপকার পাওয়া যায়।
-ব্লাড প্রেশার- ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাওয়া দাওয়ার নিয়মের পাশাপাশি দরকার নির্দিষ্ট সময় মেনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হাঁটা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্লাড প্রেশারের সমস্যা কমাতে ৩০ মিনিট নিয়ম করে রোজ হাঁটলে তা উপকার দেবে।
-হার্ট ভালো রাখতে- বলা হচ্ছে, নিয়মিত হাঁটলে রক্তনালীর দেওয়াল গুলিতে চর্বি কম জমে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এছাড়াও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতেও কাজ দেয় হাঁটার অভ্যাস। এতে কমে যায় স্ট্রোকের সম্ভাবনা।
ছবি: জার নিউজ,
ছবিতে : পোর্ট রানার্স দল , চট্টগ্রাম |
জার নিউজ,নিজস্ব প্রতিবেদক, ২৯/১০/২০২৩ ইংরেজি
তথ্যসুত্রেঃ হিন্দুস্তান টাইমস, আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন |