আটকে রাখা তিন কার্গো এখনও ছাড়েনি আরাকান আর্মি, ‘ভাগ’ চায় বাণিজ্যে

Date: 2025-01-20
news-banner
মিয়ানমারে চলমান সংঘাতের ভাব থাকলেও রাখাইনের টাউনশিপ মংডু আরাকান আর্মির দখলের পর অচল হয়ে পড়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত স্থলবন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। মূলত সীমান্তে নৌপথে আরাকান আর্মির প্রতিবন্ধকতায় স্থলবন্দরে পণ্যবাহী ট্রলার আসছে না বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।

সর্বশেষ দেড় মাস পর গত বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে স্থলবন্দরে আসার পথে নাফ নদের মোহনায় পণ্যবাহী তিনটি কার্গো বোট আটকে রেখেছে সংগঠনটি। এসব বোটে ৫০ হাজার বস্তা পণ্য রয়েছে। তিন দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকাল পর্যন্ত পণ্যবাহী কার্গো তিনটি মংডু খায়ুংখালী খালে আরাকান আর্মির হেফাজতে রয়েছে। 


এ বিষয়ে টেকনাফ স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘এখনও পণ্যবাহী কার্গোগুলো ছেড়ে দেয়নি আরাকান আর্মি। এ ঘটনার পর থেকে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কের মধ্য রয়েছেন। কেননা, এর আগে থেকে সে দেশের সংঘাতের কারণে ব্যবসায়ীরাদের পণ্য আসা কমেছিল। তবে এই সমস্য সমাধানে সরকারের এগিয়ে আসা উচিত। অন্যথায় টেকনাফ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন ব্যবসায়ীরা।’


এদিকে, মিয়ানমারে চলমান গৃহযুদ্ধে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর রাখাইন রাজ্যে মংডু টাউনশিপ আরাকান আর্মির দখলে নেয়। এরপর থেকে কোনও পণ্যবাহী জাহাজ বন্দরে আসেনি। সর্বশেষ মিয়ানমার থেকে ৩ ডিসেম্বর টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ এসেছিল।

স্থলবন্দর একাধিক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেড় মাস পর মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন থেকে গত শনিবার সে দেশের ব্যবসায়ী তারুয়া মিতা, সৌ টাংসহ কয়েকজন ব্যবসায়ীর পণ্যবাহী কার্গো বোট টেকনাফ স্থলবন্দরের উদ্দেশে রওনা দেয়। পাচঁ দিনের মাথায় কার্গোগুলো গত বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় নাফ নদের মোহনায় মিয়ানমারের জলসীমায় তল্লাশির নামে কার্গো তিনটি আটকে দেয় আরাকান আর্মি। সেখানে ৫০ হাজারের বেশি বস্তা মালামাল রয়েছে। এর মধ্য আচার, শুঁটকি, সুপারি, কফিসহ বিভিন্ন মালামাল রয়েছে। স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী শওকত আলী, ওমর ফারুক, মো.আয়াছ, এম এ হাসেম, মো. ওমর ওয়াহিদ, আবদুর শুক্কুর সাদ্দামসহ অনেকের মালামাল সেখানে রয়েছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, ‘পণ্যবাহী কার্গোগুলো এখনও আরাকান আর্মির হেফাজতে রয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত এটির সমাধান হবে। সেখানে প্রায় ৩০-৪০ কোটি টাকার মালামাল রয়েছে। যেখান থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে সরকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারে সংঘাতের পর থেকে সীমান্তে বাণিজ্য করা ব্যবসায়ীরা খুব বিপদে রয়েছেন। অনেকে পণ্যের জন্য ডলার পাঠানোর পর যুদ্ধের কারণে মালামাল আনতে পারছেন না। এতে ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়েছেন। অনেক ব্যসায়ী টেকনাফ থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছেন। তাই সরকারের উচিত মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলে দুই দেশের স্বার্থে সীমান্ত বাণিজ্য সচল রাখা।’

image

Leave Your Comments