বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু

Date: 2023-02-14
news-banner
১৯৫২ সালে চীনের বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত শান্তি সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু বাংলা ভাষায় বক্তৃতা করেন। বঙ্গবন্ধু দুটি কারণে ঐ সম্মেলনে বাংলায় বক্তৃতা করেন। প্রথমত, চীনের অনেক প্রতিনিধি ইংরেজি জানা সত্ত্বেও মাতৃভাষায় বক্তৃতা করেন এবং দ্বিতীয়ত, বঙ্গবন্ধুর চীন সফরের কিছুদিন আগে পূর্ব বাংলায় মাতৃভাষার জন্য যে আন্দোলন হয়েছে, তা অন্য দেশের প্রতিনিধিদের কাছে আরো একবার তুলে ধরা। এভাবে ভাষা আন্দোলনের কিছুদিন পরেই বঙ্গবন্ধু দেশের বাইরে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন।
বাংলা ভাষার উৎকর্ষ ও বহুমাত্রিকতা বিকাশে ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয় বাংলা একাডেমি। বর্তমানে বাংলা একাডেমি একটি বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। অনেকের অজানা, পূর্ব বাংলায় বাংলা ভাষার বিকাশে বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু তখন পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকারের মন্ত্রী। মূলত ঐ সময় বঙ্গবন্ধুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পাকিস্তান সরকার পূর্ব বাংলায় বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠায় রাজি হয়। এছাড়া বাংলা একাডেমি প্রথম যে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন করে, সেটিও বঙ্গবন্ধুর উত্সাহ ও আন্তরিক  প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়।
৫ জুন ১৯৫৫ সালে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ঐ সময় অবাঙালি পাকিস্তানি শাসকেরা পূর্ব বাংলার নাম পরিবর্তন করে পূর্ব পাকিস্তান রাখতে সচেষ্ট হয়। অথচ ‘বাংলা’ শব্দটার একটা নিজস্ব ইতিহাস আছে, আছে এর একটা ঐতিহ্য। বঙ্গবন্ধু এ সময় এই প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাস যখন বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি, যখন মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানোর আয়োজন চলছিল, তখন বঙ্গবন্ধু বলেই শত্রুর সামনে বলতে পেরেছিলেন, ‘ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা’।


image

Leave Your Comments