এস আলমমুক্ত ৬ ব্যাংকে এলসি খোলার শর্ত প্রত্যাহার

Date: 2024-12-07
news-banner
এস আলম গ্রুপের কব্জা থেকে মুক্ত শরিয়াহভিত্তিক ছয় ইসলামী ব্যাংকে এলসি খোলার শর্ত তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে ব্যাংকগুলোর এলসি খোলার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের শতভাগ অর্থ আগে পরিশোধ করতে হবে না। এর ফলে ব্যাংকগুলো গ্রাহকের সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারবে। তবে অন্য সব ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ বহাল থাকবে।
বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। এস আলমমুক্ত হওয়ার পরপরই শতভাগ মার্জিনের ভিত্তিতে এলসি খোলার শর্ত যুক্ত করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বিতর্কিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলম মাসুদ ওরফে এস আলম ২০১৭ সালে ব্যাংকগুলো দখলে নিয়েছিল। এরপর ব্যাংকগুলো থেকে বানের পানির মতো বিনা বাধায় টাকা বের করে নেয় এস আলম গ্রুপ। কখনো নিজ নামে, তবে বেশির ভাগই বেনামে ঋণের আকারে অর্থ বের করে নেয় এস আলম। আবার সিএসআরের নামেও ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ বের করে নেয়।


বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এস আলম ছয়টি ব্যাংক থেকে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা বের করে নেয়। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক থেকেই অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটসহ প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকা বের করা হয়। ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আব্দুর রঊফ তালুকদার পালিয়ে যাওয়ার পর নতুন গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পান বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর। এর পর থেকেই এস আলমের সব লুটপাট বন্ধ হয়ে যায়। এস আলমের দখলে থাকা ব্যাংকগুলোর পর্ষদ একে একে ভেঙে দেয়া হয়। গঠন করা হয় নতুন পর্ষদ। এভাবেই এস আলমের দখল থেকে মুক্ত হয় ব্যাংকগুলো। এর পরপরই ব্যাংকগুলোর দুর্বলতা কাটাতে কিছু বিধি নিষেধ আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে এলসি খোলার ক্ষেত্রে শতভাগ মার্জিন আরোপ করা হয়। এসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল এস আলম যাতে এলসির নামে অর্থ আর বের করে নিতে না পারে সে জন্য আগাম পদক্ষেপ হিসেবে।

এ দিকে এস আলমমুক্ত হলেও একমাত্র ইসলামী ব্যাংক ছাড়া অন্য ব্যাংকগুলোতে চরম দুর্ভোগ শুরু হয়েছে। বেশির ভাগ অর্থ এস আলম ঋণের নামে হাতিয়ে নেয়ার পর ব্যাংকগুলো গ্রাহকের আমানত ফেরত দেয়ার সক্ষমতা ভেঙ্গে পড়ে। ইসলামী ব্যাংক ছাড়া অন্য ৫টি ব্যাংক গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী অর্থ ফেরত দিতে পারছিল না। এক্ষেত্রে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর টাকার জোগান দেয়া হয়।

image

Leave Your Comments