জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেকারত্বের হার ২৮.২৪ শতাংশ।
পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই কম আয়ের চাকরিতে নিয়োজিত এবং নারী ও গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি।
বিআইডিএসের রিসার্চ পরিচালক এস এম জুলফিকার আলী কলেজ গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে বেকারত্ব নিয়ে করা এই গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী কলেজগুলো মধ্যে ৬০৮টি কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন, এর মধ্যে বিআইডিএস ৬১টি কলেজ বেছে নিয়েছে। এই গবেষণায় ১,৩৪০ জন পাস করা শিক্ষার্থী, ৬৭০ জন অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী, ৬১ জন কলেজ অধ্যক্ষ এবং ১০০ জন চাকরিদাতা অংশগ্রহণ করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্নাতক সম্পন্ন হয় ব্যবসায় শিক্ষা, সমাজবিজ্ঞান ও মানবিক বিষয়ের ওপর।
যেখানে বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয়ে পাস করা শিক্ষার্থীদের হার অনেক কম (স্নাতকে ৩.৮২%, স্নাতকোত্তরে ৩.১০%)। প্রায় ৪২.২৯% শিক্ষার্থী বেতনভোগী চাকরিতে এবং ১৬.২৪% শিক্ষার্থী নিজে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করছেন।
বেকারদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা বেশি এবং গ্রামের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেকারত্বের হারও বেশি। সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থা থেকে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেকারত্বের হার তুলনামূলক বেশি, তবে কারিগরি ও দাখিল শিক্ষায় এই হার কম।
গবেষণায় আরো বলা হয়েছে, পাস করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ৩৬% শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত এবং অনেকেই অফিসার বা অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসারের পদে চাকরি করছেন। সরকারি চাকরি করার ইচ্ছা ৪৩.১৩% শিক্ষার্থীর, যেখানে অধিকাংশের লক্ষ্য সরকারি চাকরিতে যোগদান করা।
এদিকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট শিক্ষিত জনসংখ্যার ৪৭ শতাংশ বেকার। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মতে, বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যায় বেকারত্বের হার ১০.৫ শতাংশ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার। শিক্ষাব্যবস্থা কর্মমুখী হওয়া দরকার। লেখাপড়া শুধু পরীক্ষা আর ডিগ্রিকেন্দ্রিক হলে হবে না। লেখাপড়া হতে হবে জ্ঞানকেন্দ্রিক। শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। শুধু কেতাবি শিক্ষা কাজে লাগছে না।’
বিবিএসের তথ্য মতে, দেশে ১৫ থেকে ৫৯ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি ৫০ লাখ, যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৬২ শতাংশ। জনসংখ্যার ৪২.৮৪ শতাংশ ১৫ থেকে ৩৯ বছর বয়সী। আর তরুণ শ্রেণি মোট জনসংখ্যার ৪৬ শতাংশ। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে হলে তরুণদের ওপরই নির্ভর করতে হবে সবচেয়ে বেশি। তবে তাদের শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে না।